ব্যালটে জোর করে সিল মারার পক্ষে নয় বলে আওয়ামী লীগ ভোটগ্রহণে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম চায় বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বিএনপির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচন বলতে যারা ব্যালটপেপার ছিনতাই, ভোট কারচুপি, জালিয়াতি বোঝে তারাই ইভিএমকে সমর্থন করে না।
বৃহস্পতিবার রাজধানীতে জাতীয় শোক দিবস স্মরণে এক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এর আয়োজন করে।
এ সময় কাদের নানা প্রসঙ্গের পাশাপাশি কথা বলেন ইভিএম নিয়ে। বিএনপি এবং সমমনাদের বিরোধিতার মধ্যে নির্বাচন কমিশন সম্প্রতি সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোট নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইভিএম নিয়ে সিদ্ধান্তে প্রমাণ হয়েছে বর্তমান কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ।
কাদের বলেন, ‘আমরা জালিয়াতিমুক্ত কারচুপিমুক্ত… সিল মারামারির নির্বাচন চাই না। সে জন্যই আমরা ইভিএম চাই। বিপরীতে যারা সিল মারামারির নির্বাচনে অভ্যস্ত, যারা নির্বাচন বলতে কেন্দ্র দখল, নির্বাচন বলতে ব্যালটপেপার ছিনতাই, যারা নির্বাচন বলতে ভোট কারচুপি, ভোট জালিয়াতি বোঝে, তারা ইভিএমকে সমর্থন করে না। সেটা আমি বিএনপির কথাই বলছি।’
আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘তারা একদিকে বলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার না হলে তারা নির্বাচনে আসবে না, আবার বলে ইভিএমে আসবে না। ইভিএম চান না, নির্বাচন কমিশনের সংলাপে কেন গেলেন না? ওখানে গিয়ে বলতেন।’
বিএনপির মনে কোন খেলা-সেই প্রশ্ন রেখে কাদের বলেন, ‘কী চান আপনারা? নির্বাচন চান না? তত্ত্বাবধায়ক সরকার উচ্চ আদালতের রায়ে বিদায় নিয়েছে। আবার সেখানে যেতে চান। দুনিয়ার অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, এখানেও রুটিন দায়িত্ব নিয়ে সরকার থাকবে, নির্বাচন হবে। নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে।’
বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে হবে জানিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতা বলেন, ‘অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে চাইলে আসতে হবে।’
‘জনগণ আমাদের ক্ষমতার উৎস’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জনগণ যদি ভোট না দিয়ে নির্বাচিত না করে আমরা বিদায় নেব। আমরা কারও দয়ায় বা ইলেকশন কমিশন ইভিএম দিয়েছে, এইসব দেখে রাজনীতি করি না।’
বর্তমান সরকারের হাত থেকে জনগণ মুক্তি চায় বলে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের জবাব দেন কাদের। বলেন, ‘জনগণ মুক্তি চায় না, মুক্তি চায় বিএনপি।
‘শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। একটা পদ্মা সেতুতেই কাত হয়ে গেছেন। একটা পদ্মা সেতুতেই আপনাদের বুকের ব্যাথা বেড়ে গেছে। সামনে মেট্রোরেল, চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্ণফুলী টানেল, সামনে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। আরও কত প্রকল্প!’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের আর তার ছেলে তারেক রহমানকে ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার হোতা বলেও অভিযোগ করেন কাদের। বলেন, সেই ধারাবাহিকতায় এখনও শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র চলছে।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শারফুদ্দিন আহমেদ, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্য বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, স্বাচিপের সভাপতি এম ইকবাল আর্সলান, মহাসচিব এম এ আজিজ, সদস্যসচিব আরিফুল ইসলাম জোয়ারদার টিটো, বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ইহতেশামুল হক চৌধুরী। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বাচিপের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আবু নাসার রিজভী।