বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

তিস্তা সেচ প্রকল্পে লাভবান কৃষকরা

  •    
  • ২৪ আগস্ট, ২০২২ ১৩:১০

পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারী ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী কৃষ্ণ কমল চন্দ্র সরকার বলেন, ‘কৃষকদের কাছ থেকে সেচ বাবদ প্রতি বছর মাত্র ৪৮০ টাকা নেয়া হয়। এবারে আগস্ট পর্যন্ত ৪৫ হাজার হেক্টরে সেচ দেয়া হয়েছে। খরা দীর্ঘস্থায়ী হলে কৃষকদের চাহিদামতো আরও জমিতে সেচ দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।’

বর্ষার ভরা মৌসুমেও যখন বৃষ্টির অভাবে মাটি ফেটে চৌচির, তখন তিস্তা সেচ প্রকল্পনির্ভর কৃষকরা পাচ্ছেন বেশ সুবিধা।

নামমাত্র খরচে সেচ সুবিধা পাওয়ায় বাম্পার ফলনেরও আশা করছেন প্রকল্পভুক্ত কৃষকরা। তবে সার ও কীটনাশকের দাম বাড়ার কারণে ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

জেলা সদরের রামনগর ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া এলাকার কৃষক অনিল চন্দ্র রায় বলেন, ‘পাঁচ বিঘা জমিতে আমন করেছি। তিস্তা ক্যানেল না থাকিলে মরণ হইল হায় হামার। আকাশের পানি নাই। ক্যানেলের পানি হামরা জমিত দিবার পারিছি যখন প্রয়োজন তখন, কিন্তু যেইলা কৃষক ক্যানেলের গোড়োত নাই ওমরা তো শ্যাষ। পানি দিবার পায়ছে না জমিত।’

মাঝাপাড়া এলাকার মিজানুর রহমান বলেন, ‘তিন বিঘা জমিত আবাদ করিছি তিস্তা সেচ প্রকল্পের পানি দিয়ে। পানির কোনো সমস্যা নাই। ৫০ টাকা বিঘাপ্রতি পানির জন্য দিবার নাগে। এইবার আকাশের অবস্থা খুব খারাপ, পানি না হওয়ায় জমি ফাটি যায়ছে মাইনসের। পানি বগলে (পানির অভাবে) ক্ষেত নষ্ট হয়েছে, আর হামরা ক্যানেলের পানি পায়া ওই কষ্টোত নাই।’

একই এলাকার বিধু রায় বলেন, ‘ধানের চারা রোপণ থাকি ছয়বার পানি দিলে আর নাগে (লাগে) না। পর্যাপ্ত পানি ক্যানেলোত আছে, পাইছিও হামরা। ধানের চারা সবল আছে, ভালো ফলন হইবে আশা করি।’

তবে সুবিধা না পাওয়ায় আক্ষেপ রয়েছে কয়েকজন কৃষকের।

চাঁদেরহাট এলাকার কৃষক আফতাব উদ্দিন বলেন, ‘১০ বিঘা জমিত আমন করিছি। আকাশের পানি নাই। খুব খরচ হয়ছে হামার। শ্যালো দিয়া পানি দিবার নাগেছে। ডিজেলের দাম বেশি, সারের দাম বেশি। হামরা বিপদোত আছি।’

তিনি জানান, বাড়ির পাশে তিস্তার ক্যানেল থাকলেও সেখান থেকে সুবিধা পাচ্ছেন না অনেকে। ক্যানেলটি সম্প্রসারণ করলে এলাকার অনেক মানুষের উপকার হবে বলেও জানান তিনি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নীলফামারী ডিভিশন সূত্র জানিয়েছে, খরার কারণে চলতি আমন মৌসুমে ৪০ কোটি টাকার ডিজেল সাশ্রয় করেছে তিস্তা সেচ প্রকল্প। সেচ সুবিধার জন্য ব্যবহার করতে হয়নি শ্যালো মেশিন বা অন্য কোনো সেচযন্ত্র।

এক লাখ চার হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও বিভিন্ন স্থানে ক্যানেল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ৭০ হাজার হেক্টরে সেচ দেয়ার সক্ষমতা রয়েছে দেশের বৃহত্তম তিস্তা সেচ প্রকল্পের।

তবে কৃষকদের চাহিদার কারণে এখন পর্যন্ত ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে সেচের পানি সরবরাহ করতে পেরেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। আর এই সুবিধা পেয়েছেন নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুর জেলার ১২ উপজেলার প্রায় ১৫ লাখ কৃষক।

পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারী ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী কৃষ্ণ কমল চন্দ্র সরকার বলেন, ‘কৃষকদের কাছ থেকে সেচ বাবদ প্রতি বছর মাত্র ৪৮০ টাকা নেয়া হয়। এবারে আগস্ট পর্যন্ত ৪৫ হাজার হেক্টরে সেচ দেয়া হয়েছে। খরা দীর্ঘস্থায়ী হলে কৃষকদের চাহিদামতো আরও জমিতে সেচ দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৯৮৫ সালের পর আর সংস্কার বা মেরামত করা হয়নি তিস্তা সেচ ক্যানেলগুলো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্যোগ নিয়েছেন সেচ ক্যানেলগুলো পুনর্বাসনের ব্যাপারে। বাস্তবায়ন হলে ৭০ হাজার হেক্টরে সেচ দেয়া যাবে।’

এ বিভাগের আরো খবর