বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মাঝনদীতে সন্তান প্রসব, লঞ্চে আজীবন ভাড়া ফ্রি

  •    
  • ১৯ আগস্ট, ২০২২ ০৯:২৪

লঞ্চে ছিলেন সন্তান জন্ম দেয়া নারীর মা মিনু বেগমও। কল্পনাতেই ছিল না তার নাতি লঞ্চে জন্ম নেবে। কারণ, আল্ট্রাস‌নোগ্রামের রিপোর্ট অনুযায়ী ডে‌লিভা‌রির তারিখ আরও ১৮ দিন পরে ছি‌ল। অবশ্য এতে অখুশি নন নানি, বরং লঞ্চে নাতি জন্ম নেয়ার ঘটনাটি তার কাছে এখন স্বপ্নের মতোই।

ঢাকা থেকে বরিশাল যাওয়ার পথে মাঝনদীতে লঞ্চে ফুটফুটে এক পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন প্রসূতি। সদরঘাট ছেড়ে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে এমভি প্রিন্স আওলাদ-১০ লঞ্চের ডেকে একজন ধাত্রী ও নার্সের সহযোগিতায় নবজাতকটি ভূমিষ্ঠ হয়।

এদিকে ওই লঞ্চে শিশুটি ও তার মা-বাবাকে আজীবন বিনা খরচে যাতায়াতের সুযোগ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে র্কতৃপক্ষ।

এমভি প্রিন্স আওলাদ-১০ এর সুপারভাইজার জিল্লুর রহমান নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘রাতে লঞ্চটি বরিশালের উদ্দেশে রওনা দেয়। লঞ্চের প্রথম তলার ডেকের যাত্রী ছিলেন ওই অন্তঃসত্ত্বা নারী। লঞ্চটি ঘাট ত্যাগ করার পর রাত সাড়ে ৯টায় তার প্রসব বেদনা শুরু হয়। তখন তাকে লঞ্চের কেবিনে নেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল, কিন্তু প্রসূতি ওই অবস্থায় সিঁড়ি বেয়ে উ‌ঠে যাওয়ার মতো অবস্থায় ছিলেন না। তাই তাকে ডেকে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

‘তখন ডেকের সব পুরুষ যাত্রীকে সরিয়ে দেয়া হয়। এরপর লঞ্চের একজন নারী ধাত্রী যাত্রী ও বরিশাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একজন নার্সের সহায়তায় পুত্রসন্তানের জন্ম দেন তিনি।’

ধাত্রী রানী বেগম নিউজবাংলাকে ব‌লেন, ‘হঠাৎ ক‌রে এই নারীর ব্যথা শুরু হয়। তখন তা‌কে ওষুধও খাওয়া‌নো হয়। প্রসব বেদনা আরও বাড়লে কাপড় দি‌য়ে চারপাশ ঢেকে ফেলা হয়। ‌বাচ্চার প‌জিশন ভা‌লো থাকায় ভা‌লোভা‌বেই সন্তান প্রসব ক‌রে‌ছেন ওই নারী।’

ওই প্রসূতির নাম ঝুমুর আক্তার। ২৫ বছরের এই নারী বরিশাল সদর উপজেলার রায়পাশা কড়াপু‌র ইউনিয়‌নের বাসিন্দা আব্দুল খালেকের মেয়ে ও নগরীর গড়িয়ার পাড় এলাকার বাসিন্দা মো. হারিচের স্ত্রী।

ল‌ঞ্চে ছিলেন ঝুমুরের মা মিনু বেগমও। কল্পনাতেই ছিল না তার নাতি লঞ্চে জন্ম নেবে। কারণ, আল্ট্রাস‌নোগ্রামের রিপোর্ট অনুযায়ী ডে‌লিভা‌রির তারিখ আরও ১৮ দিন পরে ছি‌ল। অবশ্য এতে অখুশি নন নানি, বরং লঞ্চে নাতি জন্ম নেয়ার ঘটনাটি তার কাছে এখন স্বপ্নের মতোই।

তিনি বলেন, ‘আমার মে‌য়ে জামালপু‌রে স্বামীর সঙ্গেই থা‌কে। এত‌দিন সেখা‌নেই ছি‌ল। ডে‌লিভা‌রির সময় ঘ‌নি‌য়ে আসায় মে‌য়ে‌কে ব‌রিশা‌লে আনার জন্য রওনা হই। এর ম‌ধ্যেই পুত্রসন্তা‌নের জন্ম দি‌য়ে‌ছে আমার মে‌য়ে। আমরা অ‌নেক খু‌শি।

‘কল্পনায়ও ভা‌বি নাই যে আমার না‌তির জন্ম ল‌ঞ্চে ব‌সেই হ‌বে। যেখা‌নে ডাক্তা‌রের হিসাব ও আল্ট্রাস‌নোগ্রাম অনুযায়ী ডে‌লিভা‌রির ১৮ দিন বা‌কি ছি‌ল, সেখা‌নে ল‌ঞ্চে বাচ্চা হওয়াটা স্ব‌প্নের মতো আমা‌দের কা‌ছে। আমার না‌তির ডে‌লিভা‌রি‌তে যে সাহায্য কর‌ছে, সে নাম রাখ‌ছে ইব্রা‌হিম।’

আজীবন ভাড়া ফ্রি

সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবেই শিশুটির জন্ম হয়েছে জানিয়ে লঞ্চের সহকারী সুপারভাইজার হৃদয় খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বর্তমানে নবজাতক সুস্থ আছে; তবে প্রসূতি একটু অসুস্থ। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিতে হবে। এ জন্য লঞ্চ দ্রুত চালানো হয়েছে।’

সদ্য ভূমিষ্ঠ ফুটফুটে ইব্রা‌হিমকে লঞ্চ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে উপহার হিসাবে ১০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে জানিয়ে সুপারভাইজার বলেন, ‘পাশাপাশি নবজাতক ও তার বাবা-মায়ের জন্য আজীবন লঞ্চে চলাচলও ফ্রি করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।’

এমন ঘটনায় আপ্লুত তিনিও। বলেন, ‘লঞ্চের ডেকের ওই যাত্রীর সঙ্গে তার মা, ভাই ও ভাবি ছিলেন। চিকিৎসকের দেয়া তারিখ অনুযায়ী নাকি ডেলিভারির সময় আরও কয়েক দিন পরে ছিল। তাই তারা লঞ্চে রওনা দিয়েছি‌লেন। কিন্তু লঞ্চেই সন্তানের জন্ম হয়েছে। এতে আমরা খুব খু‌শি, মা‌লিকও অ‌নেক খু‌শি হ‌য়ে‌ছেন।’

এ বিভাগের আরো খবর