রাজধানীতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। একের পর এক মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে যেতে থাকেন নেতাকর্মীরা। এতে অফিসফেরত মানুষ ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েন।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারা দেশে একযোগে বোমা হামলার প্রতিবাদে বুধবার বিকেলে সমাবেশ ও মিছিল করে আওয়ামী লীগ।
সমাবেশের মঞ্চ করা হয় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনের সড়কের পাশে। সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ।
সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান।
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে আওয়ামী লীগের সমাবেশ। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস/নিউজবাংলা
এ ছাড়া সমাবেশে ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ দলের কেন্দ্রীয় ও মহানগরের নেতারা।
বিক্ষোভের আগে সমাবেশে যোগ দেয়া আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীর হাতে ছিল কালো পতাকা। এ সময় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনের সড়কে দলের নেতাকর্মীদের ঢল নামে।
বিক্ষোভ সমাবেশ উপলক্ষে দুপুর থেকেই সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ফলে বেলা ৩টার দিকেই শাহবাগ থেকে প্রেস ক্লাবের সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এই পথে সাধারণ মানুষকে হেঁটে চলাচল করতে হয়েছে।
সমাবেশের কারণে কাকরাইল থেকে মৎস্য ভবনের সড়কও বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে গুলিস্তান থেকে ধানমন্ডিগামী যানগুলোকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে দিয়ে ঘুরে যেতে হয়েছে।
শাহবাগ থেকে গুলিস্তান যেতে বাসে উঠেছিলেন যাত্রী আবুল কালাম আজাদ। কিন্তু যানজটে বসে থেকে একসময় হেঁটেই রওনা হন তিনি। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘বাধ্য হয়ে এত রাস্তা হেঁটে যেতে শুরু করেছি। আসলে এসব বিষয় নিয়ে এখন আর কিছুই বলার নেই আমাদের।’
তিনি জানান, গুলিস্তান থেকে দোহার যাবেন তিনি, জরুরি কাজ থাকায় হাঁটতেই হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের সমাবেশে যাচ্ছেন দলটির নেতাকর্মীরা। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস/নিউজবাংলা
সমাবেশ চলাকালে কাকরাইল মোড়ে কথা হয় রিকশাচালক আবদুর রশিদের সঙ্গে। তিনি মালিবাগ থেকে যাত্রী নিয়ে যাবেন চকবাজার। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘মালিবাগ থেকে কাকরাইল মোড়ে আসতে যানজটের কারণে ১ ঘণ্টা লেগেছে। এত সময়ে চকবাজার চলে যেতে পারতাম। কিন্তু এখনও কাকরাইলে পড়ে আছি।’
মালিবাগ থেকে রিকশায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি যাবেন সরকার মাসুদ। তিনিও জানান, তীব্র যানজটে পড়তে হয়েছে তাকে। যার কারণে তার ১ ঘণ্টা লেগেছে। যানজটে অনেক ভোগান্তি হয়েছে।
মালিবাগ, মগবাজার ও বাড্ডা এলাকায় গাড়ি না থাকায় সড়কের পাশে শত শত মানুষ দাঁড়িয়ে ছিলেন। যে কয়েকটি গাড়ি চলেছে, সেগুলোতেও ছিল উপচেপড়া ভিড়।
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের মিছিল ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে থেকে মৎস্য ভবন, প্রেস ক্লাব, পল্টন হয়ে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে গিয়ে শেষ হয়।
এ সময় পল্টন এলাকায় ভোগান্তিতে পড়েন অফিসফেরত সাধারণ মানুষ। অনেককে যানজটে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।