নাটোরে কলেজছাত্রকে বিয়ে করা শিক্ষকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বিয়ের আট মাস পর রোববার সকাল ৭টার দিকে শহরের বলারিপাড়া এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
খাইরুন নাহার গুরুদাসপুরের খুবজিপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক। ২২ বছর বয়সী মামুনের বাড়ি উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামে। তিনি নাটোর এন এস সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
নিউজবাংলাকে তথ্য নিশ্চিত করেন নাটোরের পুলিশ সুপার (এসপি) লিটন কুমার সাহা।
তিনি বলেন, ‘কলেজছাত্র মামুন হোসেনকে আট মাস আগে বিয়ে করেন শিক্ষক খাইরুন নাহার। আজ (রোববার) সকালে ভাড়া বাসা থেকে ওই শিক্ষকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।’
স্থানীয় কয়েকজন জানান, রাত তিনটার দিকে মামুন তাদের ডেকে বলেন, তার স্ত্রী খায়রুন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এলাকাবাসী ছুটে গিয়ে ঘরের মেঝেতে শোয়ানো অবস্থায় খায়রুনের মরদেহ দেখতে পান।
এ ঘটনায় সন্দেহ হলে এলাকাবাসী মামুনকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে। পরে মামুনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে নিয়ে যায়।
বাসার কেয়ারটেকার নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘রাত দুইটার দিকে মামুন বাসা থেকে বের হয়ে যান। এরপর তিনটার দিকে বাসায় ফিরে সবাইকে ডাকাডাকি করে বলেন, তার স্ত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে সবাই ঘরে ঢুকে মেঝেতে মরদেহ শোয়ানো অবস্থায় দেখতে পায়।’
নাটোর মডেল থানা পুলিশ জানায়, প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিয়ে বিচ্ছেদের পর এক ছেলেকে নিয়ে নিজ বাড়িতেই থাকতেন খায়রুন। ফেসবুকের মেসেঞ্জারে ২০২১ সালের ২৪ জুন মামুনের সঙ্গে পরিচয় হয় খাইরুন নাহারের। পরিচয়ের ছয় মাস পর গত বছরের ১২ ডিসেম্বর কাজী অফিসে গিয়ে গোপনে তাকে বিয়ে করেন খায়রুন।
বিয়ের ছয় মাস পর গত জুলাই মাসে ঘটনাটি জানাজানি হলে দেশ জুড়ে আলোচনায় আসেন এই দম্পতি।
বিয়ের পর খাইরুন নাহার জানিয়েছিলেন, প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিয়ে বিচ্ছেদের পর তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। সে সময় আত্মহত্যার সিদ্ধান্তও নিয়েছিলেন। তখন ফেসবুকে মামুনের সঙ্গে পরিচয় হয়। মামুন খারাপ সময়ে পাশে থেকে তাকে উৎসাহ দিয়েছেন; নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। তাই পরে দুজন বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন।
বিয়ের পর মামুন হোসেন বলেছিলেন, ‘মন্তব্য কখনও গন্তব্য ঠেকাতে পারে না। খাইরুনকে বিয়ে করে আমি খুশি ও সুখী। সবার দোয়ায় সারা জীবন এভাবেই থাকতে চাই।’
থানার ওসি মো. নাছিম আহমেদ বলেন, ‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে তার মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।’