প্রতি বছরের মতো এবারও মৌসুম শেষে নরসিংদীর শিবপুরের কামারটেক গ্রামে ঢাকঢোল পিটিয়ে জাতীয় ফল কাঁঠালকে বিদায় জানানো হয়।
এ উপলক্ষে স্থানীয় ব্যাপারী ও কৃষকরা বুধবার সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে কাঁঠাল বিক্রির মহড়া দেন। মহাসড়কের পাশে সারা দিনব্যাপী চলে কাঁঠাল বিক্রির এই মহোৎসব।
কামারটেক বাজারের ফল ব্যবসায়ীরা জানান, কাঁঠালকে বিদায় জানানোর এ প্রথা দীর্ঘদিন ধরেই জেলার বিভিন্ন জায়গায় পালন করা হয়। এ বছর কামারটেক বাজারে ব্যাপারী সোহেল আহমেদ মৌসুমের শেষ কাঁঠাল বিক্রি করেন ঢাকঢোল বাজিয়ে, বাজার মাতিয়ে।
এ বিষয়ে সোহেল আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ লটের কাঁঠাল বিক্রি আমাদের ঐতিহ্য। মৌসুমের শুরু থেকে শেষে জেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে কৃষকদের কাছ থেকে কাঁঠাল কিনে মজুত রেখে বিক্রি করি। আগামী মৌসুমে আরও ভালো কাঁঠাল প্রাপ্তির আশায় শেষটা জমজমাটভাবে করা হয়।’
তিনি জানান, এই দিনে সকাল থেকে শহরের ব্যান্ডদল এনে ভ্যান গাড়িতে কাঁঠাল রেখে মহাসড়কে মহড়া দেয়া হয়। এ সময় আনন্দে মেতে ওঠেন স্থানীয়রা। পরে কামারটেক বাজারে শেষবারের মতো কাঁঠাল বিক্রি করা হয়। এ বছর শেষ হাটে ১৩৫০ টাকা দিয়ে সবচেয়ে বড় কাঁঠালটি বিক্রি করা হয়েছে। ছোট কাঁঠালের সর্বনিম্ন মূল্য ছিল ৫০০ টাকা।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, প্রতি বছর কাঁঠালকে বিদায় জানানোর এই অনুষ্ঠানের সুনির্দিষ্ট কোনো দিনক্ষণ নেই। কৃষক ও কাঁঠালের ব্যাপারীরা সময় ও স্থান নির্ধারণের পর এ আয়োজন করে থাকে।
যোশর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাসেল আহমদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শৈশব থেকে আমরা কাঁঠাল বিক্রির এ উৎসব দেখে আসছি। এ বছর কামারটেক বাজারে উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে ব্যাপারীরা কাঁঠাল বিক্রি করেছেন।’
তিনি আরও জানান, মৌসুমে ব্যাপারীরা অনেক কাঁঠাল কেনেন স্থানীয় কৃষক ও বাগান মালিকদের কাছে থেকে। ১০ লাখ টাকার কাঁঠাল কিনলে তাদের লাভ হয় অনেক। লাভের পর মৌসুম শেষে যে কাঁঠাল থাকে সেগুলো নিয়ে উৎসবে মেতে ওঠেন তারা। এ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মৌসুমের কাঁঠাল বিক্রি বন্ধ করেন তারা।