জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের মনে করেন দেশে যখন তেলের দাম কম ছিল, তখন হাজার হাজার কোটি টাকা লাভ হয়েছে। আর সেই সব টাকা লুটপাট হয়েছে। এখন আবার জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে মানুষের জীবনকে দুর্বল ও দুর্বিষহ করে তোলা হয়েছে।
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে সোমবার রাজধানীর কাকরাইলে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে জাতীয় পার্টি। সেখানেই পার্টির চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, ‘সরকারের নির্দয় সিদ্ধান্তে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। মানুষের প্রতি ভালোবাসা থাকলে সরকার এমন গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।
‘যখন তেলের দাম কম ছিল, তখন হাজার হাজার কোটি টাকা লাভ হয়েছে। সেই টাকা গেল কোথায়? নিশ্চয় তা লুটপাট হয়েছে। করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এখন মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। তখন জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে মানুষের জীবনকে দুর্বল ও দুর্বিষহ করে তোলা হয়েছে।’
সরকারের সমালোচনায় তিনি বলেন, ‘তেলের দাম বাড়লেই গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়া হয়। তখন সরকার পরিবহন মালিকদের হাত-পা ধরে ভাড়া বাড়িয়ে দেয়। অতিরিক্ত ভাড়া দিতে রাজি না হলে যাত্রীকে পথে নামিয়ে দেয়া হয়। জনগণের এই দুর্ভোগ দেখার যেন কেউ নেই।
‘বিদ্যুৎ খাতে রেন্টাল, কুইক রেন্টাল আর ক্যাপাসিটি চার্জের নামে উৎপাদন ছাড়াই হাজার কোটি টাকা লোপাট হচ্ছে। আমরা জ্বালানি খাতের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে বলছি।’
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাজধানীর কাকরাইলে সমাবেশ করে জাতীয় পার্টি। ছবি: নিউজবাংলা
ক্ষোভ প্রকাশ করে জি এম কাদের বলেন, ‘আগে আমি যখন বলেছি, দেশ শ্রীলঙ্কার দিকে যাচ্ছে। তখন বলা হলো আমি নাকি মূর্খ। তাহলে দেশের এই অবস্থা কেন? শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আমাদের অনেক মিল আছে। সেখানে স্বৈরশাসন চলেছে, জনগণের কাছে শাসকদের জবাবদিহি নেই। আর সেখানে মেগা প্রকল্পের নামে লুটপাট ও দুর্নীতি চলেছে।’
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘আমরা সরকারের সঙ্গে নির্বাচনি জোট করেছিলাম। তারা এত লুটপাট-দুর্নীতি করবে, এটা ভাবতেও পারিনি। প্রধানমন্ত্রী গণভবনের গণ্ডির মধ্যে থেকে সঠিক অবস্থা জানতে পারছেন না। তার দলের লোকজন কীভাবে লুটপাট করছে, তা জানতে পারছেন না।’
সমাবেশে জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, কো-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামসহ নেতারা বক্তব্য রাখেন।
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে জাতীয় পার্টি দুই দিনের কর্মসূচি দিয়েছে। সোমবার সমাবেশের পাশাপাশি তারা পল্টন এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে। ১০ আগস্ট তারা দেশব্যাপী প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি দিয়েছে।