রাজশাহী নগরীতে ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্টের সঙ্গে তর্কাতর্কির পর নিজের অ্যাপাচি বাইকে আগুন দিয়েছেন এক যুবক।
নগরীর হড়গ্রাম বাজার অকটের মোড়ে সোমবার বেলা দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
মোহাম্মদ আসিক আলী নামে ওই যুবকের বাড়ি নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানায়।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার অনির্বাণ চাকমা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ওই যুবক গাড়ির কোনো কাগজপত্র ছাড়াই যাচ্ছিলেন। বেলা দেড়টার দিকে ট্রাফিক সার্জেন্ট আব্দুল কাইউম তার কাছে গাড়ির কাগজ দেখতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। ট্রাফিকের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।
‘একপর্যায়ে কিছু বুঝে ওঠার আগেই তিনি তার গাড়িতে (বাইকে) আগুন ধরিয়ে দেন। পরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।’
ট্রাফিক বিভাগের এই কর্মকর্তা দুপুরে বলেন, ‘সে তার গাড়িতে আগুন ধরাতেই পারে, তবে এটি কী কারণে সে করেছে সেটা জানার জন্য তাকে থানায় নেয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার বা আটক নয়, মূলত জানার জন্যই তাকে আমরা নিয়ে এসেছি। কথা বলছি।’
এর আগে গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বাড্ডা লিংক রোড এলাকায় ট্রাফিক সার্জেন্ট মামলা দেয়ার প্রস্তুতিকালে ক্ষোভে নিজের মোটরসাইকেলে আগুন দেন এক বাইকার।
মিরাদুল মুনিম নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী আগুন ধরিয়ে দেয়ার পর সেটি ভিডিও করে ফেসবুকে শেয়ার করেন। মুহূর্তে সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: মামলার প্রতিবাদে নিজের বাইকে আগুন
তিনি লেখেন, ‘মনের কষ্টে নিজের বাইকে আগুন! কাগজপত্রে সামান্য ত্রুটি থাকায় মামলা দেয় পুলিশ। তাই মনের কষ্টে গ্যাসলাইট দিয়ে নিজেই আগুন ধরিয়ে দেয় শওকত আলম সোহেল নামে এই হতভাগা আদম। অনেক চেষ্টা করেও আগুন নেভাতে চেষ্টা করলাম, কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ!’
ভিডিওতে দেখা যায়, বাইকে আগুন দিয়ে সোহেল উদভ্রান্তের মতো চিৎকার করছেন। প্রত্যক্ষদর্শী একজন পানি ঢেলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন। তখন সোহেল এসে তাকেই বাধা দেন। বলেন, ‘কেউ যাবেন না, আপনারা কেউ যাবেন না।’
অন্য একজন সোহেলকে বলেন, ‘ভাই মাথা ঠান্ডা করেন।’
পুলিশ সে সময় জানায়, সার্জেন্ট এই ঘটনার পর আর মামলা দেননি।
দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছিলেন, জীবিকা নির্বাহে শওকত নামে ওই বাইকার দুই মাস ধরে বাইকে যাত্রী পরিবহন করছিলেন। তিনি অ্যাপভিত্তিক রাইড সেবা উবার ব্যবহার করতেন।
ওই ঘটনার কয়েক দিন আগে পল্টনে ট্রাফিক আইন অমান্য করায় একটি মামলা হয় শওকতের নামে। এ মামলার টাকা পরিশোধ করার পর সকালে আবার মামলা দিতে যাচ্ছিলেন বাড্ডা এলাকার দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক সার্জেন্ট। তখন ক্ষুব্ধ হয়ে বাইকের ট্যাংকি থেকে তেল বের করে তাতে আগুন ধরিয়ে দেন শওকত।
ওসি আজাদ বলেন, ‘আর্থিক কষ্টে আগুন দেন বলে শওকত জানিয়েছেন। মামলার টাকা পরিশোধ করে চলতে পারছিলেন না।’