বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ডাকাতদের হাতে বাসযাত্রী ‘ধর্ষণ’, আলামত যাচ্ছে ঢাকায়

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ৭ আগস্ট, ২০২২ ১৯:১৬

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি উত্তর) ওসি মো. হেলাল উদ্দিন জানান, ডাকাতির বিষয়টি তিনজনই স্বীকার করেছেন। তবে ধর্ষণের কথা কেবল আসামি রাজা মিয়া স্বীকার করেছেন।

টাঙ্গাইলে ঈগল এক্সপ্রেসের বাসে ডাকাত দলের হাতে ধর্ষণের অভিযোগ করা নারীর সোয়াব টেস্টের ফল নেগেটিভ এসেছে। ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত করতে বিভিন্ন আলামত পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে ঢাকায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই নারীর শারীরিক পরীক্ষার জন্য গঠন করা টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান রেহেনা পারভীন।

তিনি রোববার বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে সোয়াব টেস্ট নেগেটিভ আসতে পারে। এতে ধর্ষণ হয়নি এমনটি বলা যাবে না।

‘তবে ওই নারীর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতচিহ্ন থাকা ও বিভিন্ন আলামত দেখে এটা ধর্ষণ বলে মনে করা হচ্ছে। অধিকতর পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন আলামত ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।’

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি উত্তর) ওসি মো. হেলাল উদ্দিন জানান, ডাকাতির বিষয়টি তিনজনই স্বীকার করেছেন। তবে ধর্ষণের কথা কেবল আসামি রাজা মিয়া স্বীকার করেছেন। অন্য দুজন ডাকাতিতে অংশ নেয়া অন্যদের নাম-পরিচয় দিয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।

তিন আসামির আদালতে দেয়া জবানবন্দির বরাতে ওসি এসব তথ্য রোববার জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আসামিরা ছিলেন ছিঁচকে ডাকাত। তারা মহাসড়কে ডিম ও গ্যাস সিলিন্ডার বহনকারী গাড়িতে ছোট ছোট ডাকাতি করতেন। লুট শেষে গাড়ি মহাসড়কেই ফেলে রেখে যেতেন। মঙ্গলবারও তারা এ রকম ডাকাতি করার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। হঠাৎ করেই তারা বাসের যাত্রীদের কাছ থেকে মালামাল লুটের সিদ্ধান্ত নেন এবং ওই বাসে ডাকাতি করেন।’

যা ঘটেছিল

জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সরকার মোহাম্মদ কায়সার বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকাগামী ঈগল এক্সপ্রেসের বাসটি সিরাজগঞ্জ রোডে জনতা নামক খাবার হোটেলে যাত্রাবিরতি করে। সেখানে ৩০ মিনিটের মতো বিরতি শেষে বাসটি ফের ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে।

পথে তিনটি স্থান থেকে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চারজন করে মোট ১২ জন ডাকাত যাত্রীবেশে বাসে ওঠেন এবং পেছনের দিকে খালি সিটে বসেন।

যমুনা সেতু (বঙ্গবন্ধু সেতু) পার হওয়ার আধা ঘণ্টা পর (রাত দেড়টার দিকে) টাঙ্গাইলের নাটিয়াপাড়া এলাকায় ডাকাতরা বাসটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। ছুরি, চাকুসহ দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বাসের চালককে সিট থেকে উঠিয়ে হাত-পা বেঁধে পেছনে সিটের নিচে ফেলে রাখে।

টহল পুলিশের কাছে ধরা পড়া এড়াতে তারা বাসটিকে গোড়াই থেকে ইউটার্ন করে এলেঙ্গা হয়ে ময়মনসিংহ রোড ধরে যেতে থাকে। এই সময়ের মধ্যে ডাকাত দল বাসটির জানালার পর্দা ও যাত্রীদের পরনের বিভিন্ন কাপড় ছিঁড়ে চোখ এবং হাত বেঁধে ফেলে।পরে ডাকাতরা বাসের ২৪ যাত্রীর কাছ থেকে টাকা, মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়। বাসের এক নারীকে পাঁচ-ছয়জন ধর্ষণ করে।

এ ঘটনায় বাসের যাত্রী হেকমত আলী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। পরে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের’ শিকার নারী যা বলেন

সংবাদমাধ্যমের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন ওই নারীও। তিনি বলেন, ‘আমি কুষ্টিয়ার একটি জায়গা থেকে উঠি। সিরাজগঞ্জের হোটেলে রাত সাড়ে ১১টায় এসে পৌঁছাই। খাওয়া-দাওয়া শেষে গাড়ি চলল। তার কিছুক্ষণ পরই তিনটা ছেলে ওঠে।

‘তারপর তারা বলে, আমাদের আরও লোক আছে সামনে। তখন আরও চারটা লোক ওঠে। তার মধ্যে আরেকজন বলে, সামনে আমার আরও লোক আছে। সিরাজগঞ্জের মধ্যে আরও ছয়জন ওঠে। তাদের পেছনে সিট দিয়ে দেয়।’

নিজেকে একজন পরিবহনশ্রমিকের স্ত্রী দাবি করে ওই নারী বলেন, ‘কিছুক্ষণ পর তিনজন ড্রাইভারের কাছে গিয়ে বলে, আমরা নামব। তার পরই ড্রাইভারের গলায় চাক্কু বাধায়। তারপর ড্রাইভার ও হেলপারকে তুলে নিয়ে চলে আসে। বাসের পেছনের দিকে নিয়ে এসে আটকায়ে দেয়। সঙ্গে সঙ্গে কন্ডাক্টরকেও তুলে নেয়।’

ওই নারী আরও বলেন, ‘তারপর যাত্রীদের মধ্যে বেটাছেলেদের সবাইকে বেঁধে ফেলে। মুখও বেঁধে ফেলে। পরে মেয়েদেরও বেঁধে ফেলতে শুরু করে। টাকা-পয়সা-মোবাইল সবই কেড়ে নেয়। কারও গয়নাও নিয়ে নেয়।

‘একপর্যায়ে আমার গলা চেপে ধরে। ছয়জন আমাকে ধর্ষণ করে। পরে বিভিন্ন জায়গায় গাড়ির গতি কমিয়ে ডাকাতরা নামতে থাকে। একসময় হঠাৎ ডাকাত দলের চালক গাড়ির জানালা দিয়ে নেমে যায়। গাড়িটি খাদে পড়ে যায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আসেন উদ্ধার করতে। যাত্রীরা জানালা দিয়ে বের হয়ে আসেন। স্থানীয় লোকজন ও পুলিশের কাছে তারা ডাকাতির ঘটনা বলেন। আমাকে প্রথমে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বুধবার রাতে ভর্তি করা হয় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে।’

এ বিভাগের আরো খবর