তাইওয়ানের সঙ্গে উত্তেজনাপূর্ণ সময়ে ‘এক চীন’ নীতিতে অটল থাকায় ঢাকার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে বেইজিং।
রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে রোববার সকালে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠকে এ অবস্থান ব্যক্ত করেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই।
চীনের প্রবল বিরোধিতার মুখেও গত মঙ্গলবার তাইওয়ান সফর করেন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। নিজেদের অংশ মনে করা ভূখণ্ডে পেলোসির এ সফরকে ‘এক চীন’ নীতির প্রতি হুমকি হিসেবে দেখেছে বেইজিং। এর প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে তাইওয়ান ঘিরে সামরিক মহড়া শুরু করে চীন, যা শেষ হয় রোববার।
এমন বাস্তবতায় বাংলাদেশ সফরে আসেন চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ই। আজ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকে দুই দেশ চারটি বিষয়ে সমঝোতা স্মারকে সই করে। এগুলো হলো পিরোজপুরে অষ্টম বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ সেতুর হস্তান্তর সনদ, দুর্যোগ মোকাবিলায় সহায়তার জন্য পাঁচ বছর মেয়াদি সমঝোতা স্মারকের নবায়ন, ২০২২-২৭ মেয়াদে সংস্কৃতিক সহযোগিতা সমঝোতা স্মারকের নবায়ন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চীনের ফার্স্ট ইনস্টিটিউট অফ ওশেনোগ্রাফির মধ্যে মেরিন সায়েন্স নিয়ে সমঝোতা স্মারক।
বৈঠকে বাংলাদেশের ৯৯ শতাংশ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধার ঘোষণাও দেয় চীন।
বৈঠকের একটি সূত্র জানায়, ‘এক চীন’ নীতিতে সমর্থনের জন্য বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সাংবাদিকদের জানান, দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে চীন আরও ১ শতাংশ বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সে কারণে এখন থেকে চীনের বাজারে ৯৯ শতাংশ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে বাংলাদেশ। এর মধ্যে পোশাক শিল্পসহ অন্যান্য শিল্পপণ্য রয়েছে।
আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক শেষে ওয়াং ই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখান থেকে তিনি সরাসরি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান।
সকাল সাড়ে ১০টায় বিমানবন্দরে ওয়াং ইকে বিদায় জানান মোমেন।
দুই দিনের সফরে শনিবার বিকেলে ঢাকায় আসেন ই। কম্বোডিয়ার নমপেনে আসিয়ান সম্মেলনে থেকে সরাসরি ঢাকায় আসেন তিনি।
ঢাকা থেকে সরাসরি মঙ্গোলিয়ার উলানবাতোরে যাবেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।