প্রবাসী স্বামীর সঙ্গে বিরোধের জেরে নিজের দুই বছরের সন্তানকে নির্যাতন ও এর ভিডিও ধারণ করার অভিযোগ উঠেছে পারভীন আক্তার নামে এক নারীর বিরুদ্ধে। ওই ভিডিও পরে স্বামীকে পাঠান পারভীন।
চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলায় হওয়া ওই নির্যাতনের ভিডিওটি পরে ফেসবুকেও ভাইরাল হয়ে যায়।
ভাইরাল ভিডিও দেখে মঙ্গলবার গভীর রাতে নির্যাতিত ওই শিশুকে উদ্ধার করেছে উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ। পরে শিশুটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মা-সহ ওই শিশুকে আদালতের হেফাজতে পাঠানো হয়।
বুধবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাহরাস্তি মডেল থানার ওসি আব্দুল মান্নান।
ওসি জানান, তিন বছর আগে উপজেলার চিতোষী পশ্চিম ইউনিয়নের নূরুল আমিনের মেয়ে পারভীন আক্তারের বিয়ে হয় কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার আশিয়াদারি গ্রামের প্রবাসী মহিনউদ্দিনের সঙ্গে। তাদের সংসারে ফাহাদ নামে ২ বছরের একটি শিশুপুত্রও রয়েছে।
বিয়ের মাত্র ১ বছরের মধ্যেই প্রবাসী মহিনউদ্দিনের সঙ্গে পারভীনের দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। এ অবস্থায় পারভীন আক্তার বাবার বাড়িতে থাকার সিদ্ধান্ত নেন।
এ ছাড়া লিগ্যাল এইড চাঁদপুর কার্যালয়ে আবেদন করলে পারভীনকে ভরণপোষণ বাবদ মহিনউদ্দিন প্রতি মাসে ৮ হাজার টাকা দেবেন- এমন সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু মহিনউদ্দিন ঠিকমতো টাকা না দিতে পারায় সম্প্রতি পারভীন তাদের ২ বছরের শিশুপুত্র ফাহাদকে নির্যাতন করে ও এর ভিডিও ধারণ করে স্বামীকে পাঠান।
শিশুটির পিতা ওই ভিডিও দেখে সন্তানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মনোহরগঞ্জ এলাকার বিভিন্ন মানুষকে অনুরোধ করতে থাকেন।
ইতোমধ্যে সেই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরেও আসে।
এ অবস্থায় মঙ্গলবার গভীর রাতে ওসি আব্দুল মান্নান সহ শাহরাস্তির ইউএনও হুমায়ুন রশিদ ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবু ইসহাক চিতোষী পশ্চিম ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জোবায়েদ কবির বাহাদুরকে সঙ্গে নিয়ে শিশুটির নানার বাড়িতে যান। সেখান থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন তারা।
শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হুমায়ুন রশিদ বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল ভিডিও দেখে রাতেই শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা পেলে বাকি কাজ সম্পন্ন করা হবে।’