বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জানাজায় কর্মীদের হাতে ক্যামেরা দেখে গয়েশ্বরের আক্ষেপ

  •    
  • ১ আগস্ট, ২০২২ ১৮:৩৯

‘জানাজার অনুষ্ঠানে চারিদিকে শুধু ক্যামেরা। মানে, ছবি তোলাটাই মূল কাজ। তার জন্য দোয়া করাটা মূল কাজ না। হাতে হাতে পকেটে পকেটে ক্যামেরা। ছবি তোলা, আর নেতাদের কাছে পাঠানো আর ফেসবুকে দেয়ার মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করতেছি। এটিই একমাত্র প্রমাণ করে আমাদের দায়িত্ব।’

ভোলায় বিক্ষোভের সময় সংঘর্ষে প্রাণ হারানো স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আব্দুর রহিম মাতব্বরের গায়েবানা জানাজায় বিএনপি কর্মীদের একের পর ছবি তোলা নিয়ে খেদ ঝেড়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। কর্মীদের এই কাজ দেখে প্রশ্ন রেখেছেন, ছবি তোলাই তাদের মূল কাজ কি না।

লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে ভোলায় বিএনপির বিক্ষোভে গুলিতে স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আব্দুর রহিম মাতব্বরের মৃত্যুর প্রতিবাদে সোমবার রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভে বক্তব্য রাখছিলেন বিএনপি নেতা।

দুপুরের আগে নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে রহিমের গায়েবানা জানাজা হয়। সেখানে দলের শীর্ষ নেতারাও অংশ নেন।গয়েশ্বর বলেন, ‘জানাজার অনুষ্ঠানে চারিদিকে শুধু ক্যামেরা। মানে, ছবি তোলাটাই মূল কাজ। তার জন্য দোয়া করাটা মূল কাজ না। হাতে হাতে পকেটে পকেটে ক্যামেরা। ছবি তোলা, আর নেতাদের কাছে পাঠানো আর ফেসবুকে দেয়ার মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করতেছি। এটিই একমাত্র প্রমাণ করে আমাদের দায়িত্ব।’

বিএনপির নেতা-কর্মীরা কেউ আসল কাজটা করছেন না বলেও মনে করেন তিনি। বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন আসি, প্রতিদিন প্রতিশ্রুতি দেই, প্রতিদিন অঙ্গীকার করি, কাজটা কিন্তু করি না।

‘আজকে আমার দলের কর্মী মারা গেছে। সে ছাত্রদল, যুবদল, সেচ্ছাসেবক দল কি না জানি না। সে জিয়ার অনুসারী, সে খালেদা জিয়ার অনুসারী। সে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কর্মসূচি পালনে মারা গেছে। আজকে এখানে কেন বেছে বেছে স্বেচ্ছাসেবক দলের লোকেদের আসতে হবে? কেন ঢাকা শহরের অন্যান্য নেতা কর্মীরা আসয়ে পারবে না? কেন ঢাকার একটি নির্ধারিত যায়গায় মিছিল হবে? কেন সারা ঢাকা, সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে না? এটা আমার মাথায় ধরে না।’

কর্মীদের উদ্দেশে গয়েশ্বর বলেন, ‘সিদ্ধান্ত দেন, নির্দেশ দেন, আমরা অনেক কিছু করব- এটা রাজনীতির ভাষা না। যখন ঘটনা ঘটে তাৎক্ষণাত জানিয়ে দিতে হয় সারা দেশে। এই কাজ করার জন্য ওপরের দিকে সিদ্ধান্তের জন্য তাকিয়ে না থেকে সঙ্গে সঙ্গেই মাঠের কর্মসূচিতে যাওয়া দরকার।

‘যা হবে নগদ। আব্দুর রমিমের মতো মানুষ মারা যাবে, আর আমরা বক্তৃতা দেব, আর বসে বসে চিনাবাদাম খাব, এটা হয় না। আন্দোলন করতে গিয়ে কেউ একা নয়। সকল সংগঠনকে মাঠে নামতে হবে। তাদেরকে জবাব দিতে হবে। আপনারা সব বোঝেন। তাই যখন, যেখানে ঘটনা ঘটবে সারা দেশে যে যেখানে আসছেন মুহূর্তের মধ্য বেরিয়ে পড়বেন।’

মনে হয় পুলিশ দুলাভাই

পুলিশকে নিয়ে কথা বলার সময় ভাষা পাল্টাতে চান গয়েশ্বর। মনে করেন, যে ভাষায় কথা বলা হচ্ছে, সেটি অতি নমনীয়।বিএনপি নেতা বলেন, ‘এরা রক্তপিপাসু। এদের সঙ্গে সুন্দর সুন্দর কথা, সুন্দর বাক্য বিনিময়ের দরকার নাই। যেখানে হাত ছাড়া কথাই চলে না সেখানে হাতই ব্যবহার করতে হয়।

‘আজকে আমাদের না পেয়ে ঘরের মানুষদেরকে ধরে নিয়ে যায়। সুতরাং এরা যদি নিয়মের বাহিরে আইনের বাহিরে কাজ করতে পারে, এদের সঙ্গে আমার আইনের ভাষায় কথা বলার প্রয়োজনটা কী?’

গয়েশ্বর বলেন, ‘আমরা পুলিশকে এমন ভাবে কথা বলি না মনে হয়, ওরা আমাদের দুলাভাই। প্রজাতন্ত্রে সকল কর্মচারী আমাদের ট্যাক্সের টাকায় চলে। কিন্তু তাদের টাকায় জনগণ চলে না। হাজার হাজার কোটি টাকা বিদ্যুৎ এ লুটপাট করে বিদেশে পাচার হয়েছে। টাকার হিসাব চাইলে আপনি গুলি করে মানুষ মারবেন, কর্মীরা জীবন দেবে, দেশটার মালিক আব্দুর রহিমের মতো জনগণ, আপনারা নন।’

‘ভোলায় গুলি সরকারের নির্দেশে’

ভোলায় পুলিশকে কে গুলির নির্দেশ দিয়েছে, সেটিও জানতে চান বিএনপি নেতা। বলেন, ‘আমরা পুলিশকে দোষারোপ করি পুলিশ গুলি করছে। পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে কে? তাকে আমাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে।

‘এসপিকে বলতে চাই, আপনি পৈতৃক সূত্রে ভোলার মালিক হন নাই। চাকরি করতে গেছেন। সভা শেষে তারা মিছিল করতে চেয়েছে। মিছিল করা কোনো অন্যায় নয়। এটা নাগরিক অধিকার। আপনি বাধা দেয়ার কে? আর বাধা দিতে গিয়ে আপনি গুলি করার কে?’

পরে গয়েশ্বর বলেন, এই গুলি সরকারের নির্দেশে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সরকারের নির্দেশ যদি না থাকত, তাহলে ভোলার এসপি ইতিমধ্যে সাসপেন্ড হতেন। যারা গুলি করেছে তারা বিভাগে ক্লোসড হতেন।’

ক্ষমতায় এসে এই ঘটনার বিচার করার ঘোষণাও দেন বিএনপি নেতা। কামনা করছেন, জড়িতরা যেন তত দিন বেঁচে থাকেন।

গয়েশ্বর বলেন, ‘প্রতিটি গুলির হিসাব দিতে হবে। আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, ঈশ্বর যে সব পুলিশ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের দীর্ঘায়ু করো। কারণ, আমরা নিজের হাতে তাদের বিচার করা না পর্যন্ত ওরা জীবিত থাকে।’

এ বিভাগের আরো খবর