সাত বছর পেরিয়ে আট বছরে পদার্পণ করল বাংলাদেশে অবস্থিত বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী। দিনটি উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোতে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ছিটমহলবাসী।
জেলা পরিষদ প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে রোববার রাতে অনুষ্ঠানে কেক কেটে শুভ উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আবু জাফর।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সুজন, বিলুপ্ত ছিটমহল বিনিময় কমিটির সভাপতি ময়নুল হক, বাঁশপচাই বিলুপ্ত ছিটমহলের সাবেক সভাপতি হারুন অর রশীদসহ অনেকে।
জেলা প্রশাসক আবু জাফর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘৬৮ বছর পর ১৯৭৪ সালের মুজিব-ইন্দিরা স্থলসীমান্ত চুক্তি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক প্রচেষ্টায় ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই মধ্যরাত থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ভারতের ১১১টি ও ভারতের অভ্যন্তরে থাকা বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহলের বিলুপ্তি ঘটে। এখন এই বিলুপ্ত ছিটমহলের সর্বত্রই লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখানকার বাসিন্দাদের জীবনমান উন্নয়নে প্রতি বছর বরাদ্দ দিচ্ছে সরকার। সরকারি উদ্যোগে বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোতে পাকা রাস্তা, ডিজিটাল সেন্টার, কমিউনিটি ক্লিনিক, পুলিশ ফাঁড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির, কবরস্থান, শ্মশান, ব্রিজ, কালভার্ট নির্মিত হয়েছে।
‘অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ, স্যানিটেশন, সুপেয় পানির জন্য টিউবওয়েল, কমিউনিটি সেন্টার ও সোলার দেয়া হয়েছে। বয়স্ক, বিধবা, স্বামী পরিত্যাক্তা নারী, প্রতিবন্ধীদের জন্য করে দেয়া হয়েছে ভাতার কার্ড। তাছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ৩৬টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে বাড়ি করে দেয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জমির খারিজে ও রেকর্ডের সমস্যা রয়েছে, সেগুলোরও কাজ চলছে। এ ছাড়াও আরও যেসব সমস্যা রয়েছে সেগুলো আমরা সমাধান করব।’
৬৮ বছরের দুঃখ-বেদনা ঘোঁচাতে বাঁশপচাই ছিটমহলে অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ৬৮টি মোমবাতি জ্বালানো হয়। পরে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
এ ছাড়াও এর আগে লালমনিরহাটের বিলুপ্ত ৫৯টি ছিটমহলে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে লালমনিরহাটের ভিতরকুটি বাঁশপচাই, হাতীবান্ধা উপজেলার গোতামারী ও পাটগ্রাম উপজেলার বাঁশকাটা বিলুপ্ত ছিটমহলে বর্ষপূর্তি উদযাপন কর্মসূচি পালন করেছেন এসব এলাকার সাধারণ মানুষ।