জ্বালানি সাশ্রয়ে নগরে ব্যক্তিগত গাড়ি কমিয়ে বাস সেবায় জোর দিচ্ছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।মানসম্পন্ন বাস সেবায় ঢাকা নগর পরিবহন নামে যে উদ্যোগ নিয়ে আসা হয়েছে, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জ্বালানি সংকটের মধ্যে একে আরও দ্রুত এগিয়ে নেয়ার কথাও বলেছেন তিনি।রোববার সিঙ্গাপুরে ওয়ার্ল্ড সিটিজ সামিট ২০২২-এর মেয়রস ফোরামে অংশ নিয়ে তাপস এসব কথা বলেন। সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়। এতে জানানো হয়, মেয়র সামিটে জানান, ঢাকাকে একটি উন্নত ও টেকসই মহানগরী হিসেবে গড়ে তুলতে সমন্বিত ও কার্যকর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
তাপস বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন দীর্ঘমেয়াদি সমন্বিত মহাপরিকল্পনা তৈরি করছে। এর আওতায় পরিবহন ব্যবস্থাপনা, সামাজিক সুবিধা, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়কে সন্নিবেশ করা হয়েছে।গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে আনার লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে জানিয়ে মেয়র বলেন, “গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে আমরা গত বছরের শেষভাগে বাস রুট রেশনালাইজেশনের আওতায় ‘ঢাকা নগর পরিবহন’ নামে শৃঙ্খলিত বাস সেবা চালু করেছি। ধীরে ধীরে এই সেবা পুরো শহরে চালু করা হবে। এর মাধ্যমে জনগণ গণপরিবহনে চলাচলে স্বস্তি খুঁজে পাবে বিধায় ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার কমতে শুরু হবে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমবে।”বায়ুমণ্ডলে মাত্র শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ কমলেও জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর অন্যতম বাংলাদেশ। এ বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, কয়েক দশকে ঢাকা শহরের তাপমাত্রা যেমন বেড়েছে, তেমনি ঋতু পরিবর্তনজনিত প্রভাবে স্বাভাবিক নাগরিক জীবন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে করে নগর ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জও বেড়েই চলেছে।ছয় ঋতুর বাংলাদেশকে আজ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর বলে মন্তব্য করে শেখ তাপস বলেন, ‘ঋতুবৈচিত্র্যে বিপর্যয়ের পাশাপাশি নানাবিধ নাগরিক সমস্যার উদ্ভব ঘটছে। প্রলম্বিত হচ্ছে গ্রীষ্মকাল। এতে করে তাপদাহ বাড়ছে, সুপেয় পানির সরবরাহ কমছে।‘একইভাবে বর্ষাকালে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ও মাত্রায়ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া সুস্পষ্ট হচ্ছে। গত বছর একনাগাড়ে চার মাস থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হওয়ায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি কিছুটা উদ্বেগ সৃষ্টি করেছিল। যদিওবা আমাদের সামগ্রিক প্রচেষ্টায় আমরা ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি।’
চার দিনের সামিটটি সিঙ্গাপুরের মেরিনা স্যান্ডস্ বে হোটেলে হচ্ছে। সিঙ্গাপুরের জাতীয় উন্নয়নমন্ত্রী ও সামাজিক সেবা সমন্বয়করণ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী ডেসমন্ড লি কালে সামিটের উদ্বোধন করেন।এতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ ৬০ দেশের মেয়ররা অংশ নিচ্ছেন। আগামী ৩ আগস্ট সামিটের পর্দা নামবে।মেয়রের সঙ্গে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ ও মেয়রের একান্ত সচিব মারুফুর রশিদ খান সামিটে অংশগ্রহণ করছেন।