বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মুখপোড়া হনুমানের ‘বগুড়াকাণ্ড’

  •    
  • ৩০ জুলাই, ২০২২ ২৩:২৫

মহাভারতের ‘লঙ্কাকাণ্ডে’ পুরো নগরী পুড়িয়ে দিয়েছিলেন দেবতা হনুমান। তবে নগরী পুড়িয়ে না দিলেও এক মুখপোড়া হনুমানকে নিয়ে মেতে উঠেছে বগুড়াবাসী। গত কয়েকদিন ধরেই শহরজুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে দলছুট এই বুনো প্রাণীটি।

গত কয়েকদিন ধরেই বগুড়া শহরের এ প্রান্ত থেকে ও-প্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছে এক মুখপোড়া হনুমান। আর যেখানেই যাচ্ছে তাকে কেন্দ্র করে উৎসুক মানুষের ভিড় জমে যাচ্ছে। তাদের কেউ হনুমানটিকে ধরার চেষ্টা করছে, কেউবা ঢিল ছুঁড়ে দিচ্ছে, কেউ কেউ ভেংচিও কাটছে।

মূলত মানুষের তাড়া খেয়েই এমন ছুটাছুটি করছে হনুমানটি। শনিবার সকালে এর দেখা মেলে বগুড়া শহরের দক্ষিণ চেলোপাড়া এলাকায়।

বনবিভাগ ও পরিবেশবাদী সংগঠন জানিয়েছে, এমন বন্য প্রাণীকে বিরক্ত না করলে নিজে থেকেই বনে ফিরে যায়। এদের উদ্ধার করে খাঁচায় আটকে রাখা কোনো সমাধান নয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৫ জুলাই শহরের হাকির মোড় এলাকায় হনুমানটিকে প্রথম দেখা গিয়েছিল। পরে ২৮ জুলাই ওই এলাকা থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দক্ষিণে হনুমানকে শহরের খান্দার এলাকায় দেখা যায়। এভাবে সময়ে সময়ে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় যাচ্ছে প্রাণীটি।

শনিবার দক্ষিণ চেলোপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কালো মুখের এই হনুমানটি লম্বায় প্রায় ৩ ফুট উচ্চতার হবে। মানুষের ভিড় আর কৌতুহলের কারণে এটি এক বাড়ির ছাদ থেকে আরেক বাড়ির ছাদ বা প্রাচীরে গিয়ে একটু পর পর অবস্থান বদল করছে।

সবশেষ বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে স্থানীয় বেলাল হোসেনের বাড়ির বাগানের বড় একটি গাছে আশ্রয় নেয় হনুমানটি।

চেলোপাড়ার বাসিন্দা বেলাল হোসেন জানান, ‘সকাল থেকে হনুমানটি আমাদের এলাকায়। আমরা তাকে খেতেও দিয়েছি। চেষ্টা করছি যেন একে নিরাপদে রাখা যায়। বনবিভাগের উচিত হনুমানটিকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দেয়া।’

স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠন ‘তীর’ এর সভাপতি রাকিবুল হাসান বলেন, ‘শহরের হনুমান ঘুরে বেড়ানোর বিষয়টি আমরা জেনেছি। প্রাণীটিকে উদ্ধারের জন্য আমরা বনবিভাগকে জানিয়েছি। এ ধরনের প্রাণী উদ্ধারের জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নেই।’

রাকিবুল আরও বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে, হনুমানটি দলছুট হয়ে এসেছে। স্থানীয়দের প্রতি অনুরোধ প্রানীটিকে যেন বিরক্ত না করা হয়। তাকে তার মতো থাকতে দিলে ভালো হবে।’

বগুড়ায় হনুমান ঘুরে বেড়ানোর তথ্য পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন বন্যপ্রাণী বিভাগের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির।

তিনি জানান, এমনটা প্রায়ই হচ্ছে। এ ধরনের হনুমান সাধারণত ভারত থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনা মসজিদ বন্দরে আসা ট্রাকে করে চলে আসে। অতীতেও কয়েকটি হনুমান উদ্ধার করা হয়েছে।

জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ‘এটি সম্ভবত দলছুট হয়ে এসেছে। কয়েকটি কারণে এরা দলছুট হয়। খাদ্য প্রধান কারণ। এ ছাড়াও নিরাপদ প্রজনন পরিবেশের খোঁজেও এসব বন্যপ্রাণী লোকালয়ে চলে আসে। আবার ঘুরতে ঘুরতে বনের দিকে চলে যায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আসলে হনুমান উদ্ধার কোনো সমাধান নয়। উদ্ধার করে খাঁচায় রাখাও ঠিক নয়। বরং সুযোগ দিলে সে নিজেই যেখান থেকে এসেছে সেখানে চলে যাবে। এ জন্য তাকে বিরক্ত না করাই ভালো।’

এ বিভাগের আরো খবর