সিলেটের ওসমানী নগরে একটি বাসা থেকে অচেতন অবস্থায় একই পরিবারের পাঁচজনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাদের হাসপাতালে নেয়ার পর বাবা-ছেলে মারা যান। বাকি তিনজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
তাজপুর ইউনিয়নের মঙ্গলচন্ডী সড়কের একটি বাসা থেকে মঙ্গলবার দুপুরে অচেতন অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে পুলিশ।
ওসমানী নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাইনুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মৃতরা হলেন রফিকুল ইসলাম ও তার ছেলে মাইকুল ইসলাম।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন রফিকুল ইসলামের স্ত্রী সামিরা ইসলাম, মেয়ে হোসনারা ইসলাম ও আরেক ছেলে সাদিকুল ইসলাম।
তারা সবাই যুক্তরাজ্য প্রবাসী। ১৮ জুলাই তারা দেশে এসে ওসমানী নগরের একটি বাসা ভাড়া নেন।
বিষক্রিয়ায় এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানিয়েছেন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মাহবুবুর রহমান ভূইয়া।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘অসুস্থ তিনজন আইসিইউতে আছেন। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। বিষাক্ত কোনো খাবার খাওয়ানোর ফলে এমনটি হতে পারে। তবে এখনো নিশ্চিত করে কিছু বলা যাবে না। পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। ময়নাতদন্ত করে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।’
ওসি মাইনুল বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুরে ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে আমরা তাজপুর ইউনিয়নের মঙ্গলচন্ডী সড়কের একটি বাসা থেকে অচেতন অবস্থায় পাঁচজনকে উদ্ধার করি। এ সময় তাদের কক্ষের দরজা ভেতর থেকে সিটকিনি লাগানো ছিল। আমরা সিটকিনি ভেঙে ঘরে প্রবেশ করি।
‘উদ্ধারের পর পাঁচজনকেই সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা ২টার দিকে দুজন মারা যান। কীভাবে এ ঘটনা ঘটল তা তদন্তের মাধ্যমে বের হয়ে আসবে।’
এই প্রবাসীরা যে বাসায় ভাড়া থাকতেন সেটির মালিক স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অরুনোদয় পাল ঝলক। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘দুপুরে আমি খবর পাই তারা ঘর বন্ধ করে আছেন। ডাকলেও সাড়া দিচ্ছেন না। পরে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে তাদের উদ্ধার করে।’
এই ফ্ল্যাটের অন্য কক্ষে প্রবাসীদের কয়েকজন আত্মীয় থাকেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘তারা সুস্থ আছেন। এ ঘটনার ব্যাপারে তারা কিছুই বলতে পারেননি। তাদের কাছ থেকে খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থলে আসি।’
১৮ জুন দেশে এসে প্রবাসী পরিবারটি তার বাসা ভাড়া নেয় জানিয়ে ঝলক বলেন, ‘তাদের বাড়ি উপজেলার দয়ামীরে। কী কারণে এমন ঘটনা ঘটতে পারে তা কিছুই বুঝতেছি না।’
এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করেছেন রফিকুল ইসলামের শ্যালক সেবুল আহমদ। তিনি বলেন, ‘কালকেও আমি দুলাভাইয়ের বাসায় ছিলাম। আজ সকাল ১০টা পর্যন্ত তারা দরজা না খোলায় আমি পুলিশকে খবর দিই।
‘আমার ভাগনে মাইকুল প্রতিবন্ধী। ইংল্যান্ডে চিকিৎসায় সে সুস্থ হয়নি। তার চিকিৎসার জন্যই বোন ও দুলাভাই দেশে আসেন। কিছুদিন স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে তারা ওসমানী নগরের এই বাসায় ওঠেন।’