বাংলাদেশে বিএনপি সাম্প্রদায়িক অপশক্তির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
বলেছেন, ‘সাম্প্রদায়িকতাকে সমূলে বিনাশ করতে হলে এই সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে যারা আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়, সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে যারা রাজনীতি করে তাদের চিরতরে বর্জন করতে হবে।’
শুক্রবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে ২০০৩ সালে বাঁশখালীর সাধনপুরে ধর্মীয় সংখ্যালঘু পরিবারের ১১ জনকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় বেঁচে যাওয়া তিন জনের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর ৪৫ লাখ টাকার চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নি দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার এবং যুব সংগঠনকে যুবকল্যাণ তহবিলের অনুদানের চেকও বিতরণ করা হয়।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২০০১ সালের নির্বাচনে সরকার গঠনের পর সমগ্র দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর বিএনপি তাণ্ডব চালিয়েছে। সেই তাণ্ডবের পরিপ্রেক্ষিতে সারাদেশ থেকে পালিয়ে আসা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য ঢাকায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আশ্রয় কেন্দ্র খুলতে হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হয়েছে। নৌকায় ভোট দেয়ায় বাড়ি দখল করে রাতারাতি সেই বাড়ির মধ্যে পুকুর খনন করা হয়েছে।’
‘তাদের অপরাধ ছিল তারা অসাম্প্রদায়িক দল আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়। বাঁশখালীতেও একই অপরাধে তৎকালীন সংসদ সদস্যের নিকটাত্মীয় বিএনপি নেতা আমিন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে অগ্নিকাণ্ড ও নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটে। সেদিন সংসদ সদস্যের দায়িত্বে যিনি ছিলেন তিনি এই দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। ’
রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান এই দেশে থাকতে পারে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে সমূলে বিনাশ করতে হবে, তাহলে রাষ্ট্র এগিয়ে যাবে।’
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আদালতের মারপ্যাঁচ ও বিএনপির অনীহাসহ সবকিছু মিলিয়ে আমরা সরকার গঠনের পরও বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হতে ৪০ বছরের মতো সময় লেগেছে। বাঁশখালীর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচারের ক্ষেত্রেও এত দীর্ঘসূত্রিতা কাম্য নয়।’
এরপর তথ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মাল্টিপারপাস ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এসময় চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান, বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জিএম মাহফুজা আক্তার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দুপুরে তথ্যমন্ত্রী চট্টগ্রাম মহানগরীর ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় সংরক্ষণে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অবৈধ দখলদারমুক্ত পাহাড়ি ভূমিতে বৃক্ষরোপন করেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাঁশখালী আসনের সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান।