যশোরের অভয়নগরে সোহানুর রহমান প্রান্ত নামে এক কলেজছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় তার পাশ থেকে একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করা হয়, যেখানে পড়াশোনায় ব্যর্থতা ও এ নিয়ে হতাশার কথা উল্লেখ আছে।
শনিবার বিকেলে উপজেলার পায়রা ইউনিয়নের সমশপুর গ্রামে নিজ বাড়ি থেকেই ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ২৬ বছর বয়সী নিহত প্রান্ত ওই গ্রামের পল্লি চিকিৎসক হাবিবুর রহমান সরদারের ছেলে। এ ছাড়া তিনি খুলনা সরকারি বিএল কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
বাবা হাবিবুর রহমান জানান, গত বুধবার প্রান্ত ছাড়া বাড়ির সবাই এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান। পরের দুই দিন প্রান্তর মোবাইলে বারবার ফোন করেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
শনিবার দুপুরে প্রতিবেশীদের সহযোগিতা চাইলে তারা ঘরের দরজা ভেঙে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় প্রান্তর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় তার মরদেহের পাশে তিন পৃষ্ঠার একটি সুইসাইড নোট পাওয়া যায়।
সুইসাইড নোটে লেখা আছে- ‘প্রিয় মা-বাবা, আমার স্বপ্নগুলো কোনোদিন পূরণ হবে না। আমার শেষ ইচ্ছাটা তোমরা রেখো। আমার লাশ যেন পোস্টমর্টেম করা না হয়। আমি হঠাৎ মারা গেলাম, আমার আর বাঁচতে ইচ্ছা হয় না। আমার অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের রেজাল্ট দিয়েছে। তাতে আবারও ফেল করেছি। তৃতীয় বর্ষের রেজাল্টেও ফেল হবে। পড়াশোনার চাপ সইতে পারছি না।’
আরও লেখা আছে, ‘জব করে ঋণের বোঝা সামলানো সম্ভব হচ্ছে না। আসলে আমার কপাল ভালো না। আমার মোটরসাইকেলটি বিক্রি করে লোন শোধ করে দিও। আমি চলে গেলাম তোমাদের ছেড়ে অনেক দূরে। আমার কপাল ভালো হলে হয়তো বেঁচে থাকতাম। তোমার ছেলে (প্রান্ত)।’
পায়রা ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান বিশ্বাস বলেন, ‘প্রান্ত খুব নরম প্রকৃতির ছেলে ছিল। তার মরদেহ থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। মনে হয় লাশ কয়েক দিন ধরে ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে ছিল।’
এ ব্যাপারে অভয়নগর থানার ওসি (তদন্ত) মিলন কুমার মণ্ডল বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যা করেছেন প্রান্ত। তদন্ত চলছে। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’