বিভিন্ন জেলা থেকে লবণ মাখানো চামড়া আসতে শুরু করেছে নাটোরের চকবৈদ্যনাথ চামড়া আড়তে। ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে এবার নগদ দামে চামড়া বিক্রির প্রত্যাশা ব্যবসায়ীদের।
এবার ঢাকার বাইরে প্রতি বর্গফুট গরুর কাঁচা চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয় ৪০ থেকে ৪৪ টাকা। খাসি ১৮ থেকে ২০ এবং বকরি ১২ থেকে ১৪ টাকা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেয়া দামেই এ বছর চামড়া বেচাকেনা হচ্ছে বলে জানান এখানকার ব্যবসায়ীরা।
চকবৈদ্যনাথ আড়ত ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রাক, মিনিট্রাকে করে লবণ মাখানো চামড়া আসছে এখানকার আড়তগুলোতে।
আড়তদার লুৎফুল হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের নাটোরের চকবৈদ্যনাথ আড়তে ৩০ থেকে ৩৫টি জেলার চামড়া আমদানি হয়। ইতোমধ্যে এখানে বিভিন্ন জেলা থেকে চামড়া আসা শুরু হয়েছে।
‘অল্প কয়েকজন ঢাকার ট্যানারি মালিকদের প্রতিনিধি এসেছেন। সপ্তাহখানের মধ্যে সব ট্যানারি মালিকরা আসা শুরু করবেন। বিগত বছরগুলোতে বকেয়া টাকায় চামড়া বিক্রি করে আমরা লোকসানে পড়েছিলাম। এবার নগদ দামে চামড়া বিক্রি করব বলে আশা করছি।’
লবণের দাম কিছুটা বেশি হওয়ায় এবার চামড়া সংরক্ষণে খরচও কিছুটা বেশি পড়ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ী মাসুম হোসেন বলেন, ‘এবার লবণের দাম অনেকটাই বেশি। প্রতি বস্তা লবণ এক হাজার থেকে ১১ শ টাকা। তাই চামড়া সংরক্ষণে এবার খরচ অনেকটাই বেশি। আমাদের এখানে আশপাশের জেলা থেকে লবণযুক্ত যে চামড়া এসেছে, তা আমরা গুদামজাত করে রাখছি। এখন ট্যানারি মালিকদের আশায় বসে আছি। তারা আসলে তাদের কাছে নগদ মূল্যে চামড়া বিক্রি করব।’
নাটোরের সিংড়া থেকে ৭০০ পিস খাসি এবং দেড় শ পিসের বেশি গরুর চামড়া নিয়ে এসেছেন ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ধীরে ধীরে চকবৈদ্যনাথের হাট জমে ওঠছে। ঢাকার ট্যানারি মালিকরা এলেই বোঝা যাবে বাজার কেমন হবে। অন্যান্য বছরের তুলনায় বেচাকেনা ভাল হবে আশা করি।’
রাজশাহীর ব্যবসায়ী সুমন আহমেদ বলেন, ‘ঈদের দিন মাঠ পর্যায় থেকে আমরা চামড়া কিনেছি। সেই চামড়া লবণ দিয়ে রেখেছিলাম। এখন আড়তে চামড়া নিয়ে এসে ঢাকার ব্যবসায়ীদের অপেক্ষায় আছি।’
চামড়া বাজারে ইতোমধ্যে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে কেনাবেচা শুরু হয়েছে বলে জানালেন চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সভাপতি মকসেদ আলী।
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে আশপাশের জেলা থেকে লবণযুক্ত চামড়া আসতে শুরু করেছে। আগামী এক সপ্তাহ পর থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ চামড়া এখানকার আড়তগুলোতে আসবে। সেই সঙ্গে ঢাকার বড় বড় ট্যানারি মালিকরা এসে চামড়া কেনা শুরু করবেন।’
‘ট্যানারি মালিকদের কাছে পূর্বের অন্তত ৫০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। বকেয়া টাকা না পাওয়ায় ব্যবসায়ীরা বরাবরের মতোই পুঁজি সংকটে রয়েছেন।’
এবার আট থেকে দশ লাখ পশুর চামড়া এই বাজারে কেনাবেচা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর শুধুমাত্র কোরবানি ঈদের সময়েই দেশের মোট চামড়ার ৫০ ভাগ চামড়া ঢাকার ট্যানারিগুলোতে এখান থেকেই পাঠানো হয়। যার বাজার মূল্য অন্তত ৫০০ কোটি টাকা।’