বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এক রেলযাত্রীর নিঃসঙ্গ প্রতিবাদ

  •    
  • ১৫ জুলাই, ২০২২ ২২:০২

টিকিট কাটতে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি। এরপর রেলের সংস্কারের দাবিতে তিনি একা অবস্থান কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন কমলাপুর রেলস্টেশনে টানা আট দিন ধরে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের নানা অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে টানা আট দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি।

জুন মাসে রেলের টিকিট কিনতে গিয়ে হয়রানির শিকার হওয়ার পর গত ৭ জুলাই থেকে তিনি ছয়টি দাবিতে কমলাপুর রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টারের সামনে অবস্থান শুরু করেন। ১০ জুলাই ঈদের দিনেও তিনি অবস্থানে ছিলেন।

মহিউদ্দিন রনি বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র।

এর আগে গত এপ্রিলে এই শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রের আধুনিকায়নের দাবিতে অনশন করেন।

রনির দাবিগুলো হলো- অনলাইনে টিকিট কেনায় সহজ ডটকমের যাত্রী হয়রানি বন্ধ করে তদন্ত করে এ হয়রানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ নিতে হবে; টিকিট কালোবাজারি বন্ধ করতে হবে; অনলাইন-অফলাইনে টিকিট কেনার ক্ষেত্রে সবার সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে; ট্রেনের সংখ্যা বাড়িয়ে রেলের অবকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে; ট্রেনের টিকিট পরীক্ষক ও তত্ত্বাবধায়কসহ অন্য দায়িত্বশীলদের কর্মকাণ্ড সার্বক্ষণিক মনিটর করতে হবে; শক্তিশালী তথ্য সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে রেল সেবার মান বৃদ্ধি করতে হবে এবং ট্রেনে ন্যায্য দামে খাবার, বিনা মূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

টিকিট কিনতে কী হয়রানির শিকার হয়েছিলেন, জানতে চাওয়া হলে মহিউদ্দিন রনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি গত ১৩ জুন বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েবসাইট থেকে ঢাকা-রাজশাহী রুটের ট্রেনের আসন বুক করার চেষ্টা করি। কিন্তু মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা সংস্থা বিকাশ থেকে ভেরিফিকেশন কোড দিয়ে আমার পিন কোড ছাড়াই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়।’

রনি বলেন, ‘টাকা কেটে নিলেও আমি ট্রেনের কোনো আসন পাইনি, এমনকি টাকা নেয়ার বিষয়ে কোনো ডকুমেন্টও তারা দেয়নি। আমি সেদিন কমলাপুর রেলস্টেশনের সার্ভার কক্ষে অভিযোগ জানালে সেখান থেকে আমাকে “সিস্টেম ফেইল” করার কথা বলা হয় এবং ১৫ দিনের মধ্যে টাকা না পেলে আবার যেতে বলা হয়।’

রনির অভিযোগ, ওই মুহূর্তে ওই কক্ষে থাকা কম্পিউটার অপারেটর ৬৮০ টাকার আসন ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করেন।

মহিউদ্দিন বলেন, ‘এই ঘটনার বিষয়ে আমি ১৪ ও ১৫ জুন দুবার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করি। কিন্তু সেখান থেকে কোনো জবাব বা শুনানির জন্য ডাক আসেনি।’

টানা আট দিনের অবস্থানে অনেক শিক্ষার্থী এবং যাত্রী তার সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন বলে জানান রনি।

তিনি বলেন, ‘অনেকে আমার সঙ্গে সংহতি জানিয়েছেন। কিন্তু রেলওয়ে সিন্ডিকেটের লোকজন আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিচ্ছে। আমার সামনে দিয়ে শোডাউন দেয়, হাসিঠাট্টা করে। অবস্থান কর্মসূচি না ছাড়লে তারা আমাকে মাদক মামলায় থানায় দেবে বলেও হুমকি দেয়।’

থাকা, খাওয়া, প্রাকৃতিক কাজ সারা এবং গোসল কীভাবে করা হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখানে থাকতে খুব বেশি অসুবিধা হচ্ছে না। আর বাড়ি থেকে কিছু টাকা এনেছি। সেগুলো দিয়েই আপাতত খাওয়া-দাওয়া হচ্ছে। আর পাশে মসজিদ আছে, সেখানে বাথরুমের ব্যবস্থা আছে। আর গোসলের জন্য মাঝে মাঝে হলে যাই। তবে টানা দুই-তিন দিন আমাকে গোসল না করেই থাকতে হয়।’

দাবির বিষয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করেছে কি না জানতে চাইলে রনি বলেন, ‘গত ১০ তারিখ কর্তৃপক্ষের কয়েকজন এসে আমার দাবিগুলো জেনে গেছে। এরপর আর আপডেট দেয়নি।’

রনি জানান, এসব দাবি যতদিন পূরণ বা পূরণের আশ্বাস না পাওয়া যাবে, ততদিন তিনি অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।

এ বিভাগের আরো খবর