নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে অনুমোদন দেয়া লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি সমালোচনার মুখে পড়েছে। এ নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ঢাউস কমিটিতে পদ পেয়েও লজ্জায় পড়েছেন অনেকে।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জেলা কমিটি ৮১ সদস্যবিশিষ্ট হলেও এই কমিটিতে পদ দেয়া হয়েছে ৩৮৩ জনকে। সহ-সভাপতি করা হয়েছে ৬৬ জনকে, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ৭৭, সহসাধারণ সম্পাদক ৫১, আর সহসাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে ৭১ জনকে। এ চার পদের বিপরীতে নেতা হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ২৬৫ জনকে।
হাসান মাহমুদকে সভাপতি ও আবদুল্লাহ আল মামুনকে সাধারণ সম্পাদক করে লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় সংসদ।
বুধবার রাতে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ এই কমিটিতে সই করেন।
জেলা ছাত্রদলের সাবেক চার নেতা জানিয়েছেন, সহসভাপতি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকসহ চার পদের বিপরীতে ২৬৬ জনকে নেতা বানানোর মতো ঘটনা লক্ষ্মীপুরে এবারই প্রথম। আগে এ চারটি পদে সর্বোচ্চ ২০ থেকে ২২ জনকে রাখা হতো। নতুন এ কমিটি ঘোষণার পরপরই জেলার রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বর্তমান কমিটির এক সহসভাপতি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, গণহারে সহসভাপতি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সহসাধারণ সম্পাদক ও সহসাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে। এ কমিটিতে রাখায় তিনি লজ্জিত হয়েছেন। সান্ত্বনা দেয়ার জন্য চার পদে ২৬৫ জনকে রাখা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাসান মাহমুদ ইব্রাহিম বলেন, ‘তৃনমূলের নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করা হয়েছে। এটি জেলা ছাত্রদলের শক্তিশালী একটি পূর্নাঙ্গ কমিটি। আগামীতে এই কমিটির মাধ্যমে আন্দোলন সংগ্রাম করা হবে। মাঠে থাকবে জেলা ছাত্রদল।’
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাসিবুর রহমান বলেন, ‘কমিটিতে ছাত্রদলের যোগ্য নেতারা স্থান পেয়েছেন। এতে ছাত্রদল আগের চেয়ে অনেক শক্তিশালী হবে।’
নবগঠিত কমিটির নেতাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন এই বিএনপি নেতা।
এ বিষয়ে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম বলেন, ‘জেলা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ৬-৭ বছর ধরে নানা কারণে ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি। এতে দলের অনেক ত্যাগী নেতাকে পদে রেখে মূল্যায়ন করা যায়নি। অনেকটা সেশনজটের মতো অবস্থা ছিল।
‘ত্যাগী সেই নেতাদের মূল্যায়ন করতে সহসভাপতি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পদে রাখা হয়েছে। জেলা ছাত্রদলের কমিটি ৮১ সদস্যবিশিষ্ট, কিন্তু লক্ষ্মীপুরে একটু নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছে। কয়েক মাসের মধ্যে কমিটি ভেঙে আহ্বায়ক কমিটি করা হবে।’