ঈদের আগে-পরে সাত দিন মোটর সাইকেলে করে এক জেলা থেকে আরেক জেলায় যাতায়াত নিষিদ্ধের পর এবার নৌপথে দুই চাকার যানটি বহন নিষিদ্ধ হয়ে গেল।
এরই মধ্যে সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়ে গেছে। আগামী ১১ দিন এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। অর্থাৎ ঈদের পর আরও পাঁচ দিন লঞ্চে বা ফেরিতে করে বাইক পরিবহন করা যাবে না।
সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল গত ১২ জুন। আর সেটি কার্যকর হয়েছে ২৪ দিন পর।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম খান।
গত ঈদুল ফিতরে মাওয়া প্রান্ত থেকে ফেরিতে করে বাইক নিয়ে পদ্মা পার হচ্ছেন লোকজন। ফাইল ছবি
গত ৩ জুলাই মহাসড়কে এক জেলা থেকে আরেক জেলায় বাইক চলাচল সাত দিনের জন্য নিষেধ করার কথা জানানো হয়। ৭ থেকে ১৩ জুলাই পর্যন্ত থাকবে এই নিষেধাজ্ঞা।
এই আদেশের কারণে ঈদে এবার বাইকে করে বাড়ি ফেরার পথ বন্ধ হয়ে গেল, যে সিদ্ধান্তটি বাইকারদেরকে তীব্রভাবে অসন্তুষ্ট করেছে।
গত ঈদে লাখো মানুষ বাইক নিয়ে বাড়ি ফেরে। ফলে বিভিন্ন সড়কে আগে যে দীর্ঘ যানজট দেখা যেত সেটি ছিল না। গণপরিবহনেও ছিল না বাড়তি ভিড়। প্রতি বছর বাসের টিকিটের জন্য যাত্রীদের যে হাপিত্যেস দেখা দেয়, সেটিও দেখা যায়নি। ফলে মানুষের ঈদ যাত্রা ছিল নির্বিঘ্ন।
এরপরই পরিবহন মালিকরা মহাসড়কে মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের কাছে।
গত ঈদুল ফিতরে ফেরিতে ওঠার জন্য বাইকারদের দীর্ঘ সারি ছিল মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ঘাটে। ফাইল ছবি
মহাসড়কে বাইক নিষিদ্ধের পেছনে দুই চাকার দ্রুতগামী এই যানের দুর্ঘটনাপ্রবণতাকে সামনে আনা হচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে সড়কে দুর্ঘটনায় যত মৃত্যু হয় তার মধ্যে এককভাবে ৪০ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি দায়ী বাইক। মহাসড়কে গতির লড়াইয়ে নেমে প্রায়ই নিয়ন্ত্রণ হারায় চালকরা। আর মহাসড়কে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার খুবই বেশি।
তবে বাইক নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়ায় এবার ঈদ যাত্রায় আগের ভোগান্তি দেখা দেয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বাইকাররা রাজধানীতে কর্মসূচি পালন করেও সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে।
গত ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরের দিনই সেতু দিয়ে মোটরসাইকেল পারাপার নিষিদ্ধ করে কর্তৃপক্ষ। সেতু দিয়ে ঈদের আগে আর বাইক চলাচলের সুযোগ দেয়া হবে না বলেও জানানো হয়েছে।
এই নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে মাওয়া পর্যন্ত দিয়ে ফেরি দিয়ে পদ্মা নদী পার হয়ে আবার বাইকে চড়ে গন্তব্যে যাচ্ছিল বাইকাররা। কিন্তু নতুন সিদ্ধান্তে এই সুযোগও বন্ধ হয়ে গেল।