সেনা কল্যাণ সংস্থার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধন করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।
রাজধানীর মহাখালীতে এসকেএস টাওয়ারের ১০তম তলায় সেনা কল্যাণ সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে রোববার কর্নারটির উদ্বোধন করেন সেনাপ্রধান। এর আগে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু করেন তিনি।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে।
সেনা কল্যাণ সংস্থা থেকে সাহায্যপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান, এই সংস্থায় কর্তব্যরত অবস্থায় আহত ও নিহত সদস্যদের পরিবারের মাঝে উপহার সামগ্রী এবং মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেন সেনাপ্রধান। এ সময় কল্যাণ সংস্থায় কর্মরত সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর উদ্দেশে বক্তব্য দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নির্দেশনায় স্বাধীনতার আগের ‘ফৌজি ফাউন্ডেশন’ জনগণ ও সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কল্যাণের ব্রত নিয়ে ১৯৭২ সালের ১ জুলাই সেনা কল্যাণ সংস্থা নামে নতুন জন্ম পায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনী প্রধান ও চেয়ারম্যান বোর্ড অফ ট্রাস্টির বলিষ্ঠ দিকনির্দেশনায় এই সেবামূলক প্রতিষ্ঠান আর্ত-মানবতার সেবায় কাজ করে যাচ্ছে। কল্যাণমুখী এই প্রতিষ্ঠান বিগত বছরগুলোতে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রায় ২০ লাখ অবসরপ্রাপ্ত সদস্যকে ৪৫৬ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে। বাংলাদেশ সরকারকে দেড় হাজার কোটি টাকারও বেশি কর দিয়ে জাতি গঠনে প্রশংসনীয় অবদান রাখছে প্রতিষ্ঠানটি।
ঢাকা সিএমএইচ-এ ক্যান্সার ইউনিট প্রতিষ্ঠায় প্রায় ২০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে সেনা কল্যাণ সংস্থা। সশস্ত্র বাহিনী বোর্ডের তত্ত্বাবধানে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৩০টি মেডিক্যাল ডিসপেনসারি এবং ঢাকার ডিওএইচএসে চারটি জরুরি চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠানটির অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে।
করোনা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে পাঁচ কোটি টাকা অনুদান দেয়া হয়। দেশব্যাপী করোনা ও বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সেনা কল্যাণ সংস্থা খাবার ও ত্রাণসামগ্রী নিয়ে দুস্থদের পাশে দাঁড়িয়েছে।
বেনিন দুর্ঘটনা এবং ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে পিলখানায় শহিদ সেনা অফিসারদের পরিবারের কল্যাণে প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় মিরপুর ডিওএইচএসে ১৪ তলাবিশিষ্ট অপরাজিতা বিল্ডিং নির্মাণের উদ্যোগ নেয় এই প্রতিষ্ঠান।
নির্ধারিত সময়সীমার ১৪ মাস আগে প্রাক্কলিত ব্যয় থেকে ৯ কোটি টাকা সাশ্রয় করে যাবতীয় নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়। ২০১৫ সালের ৭ অক্টোবর ৭৮ জন শহিদের পরিবারের সদস্যদের মাঝে ফ্ল্যাট হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সিমেন্ট, ফ্ল্যাট, রেডিমিক্স কনক্রিট, এলপিজি, ভোজ্যতেল, আটা, ময়দা, সুজি, পানি ও বিভিন্ন ধরনের গুড়া মশলাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য খোলা বাজারে ন্যায্য মূল্যে সরবরাহের মাধ্যমে বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতেও ভূমিকা রেখেছে সেনা কল্যাণ সংস্থা।
সেনা কল্যাণ সংস্থার অঙ্গ সংস্থা সেনা কল্যাণ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে নিষ্ঠা ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে সেবা দিয়ে আসছে। কনস্ট্রাকশন ও ডিমাইনিং কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব, বাহরাইন, মালয়েশিয়া ও জাতিসংঘ মিশনে বিভিন্ন ব্যবসা সম্প্রসারণে পদক্ষেপ নিয়েছে সেনা কল্যাণ সংস্থা।