প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে পূর্ণিমা রাতে পদ্মা সেতু দেখতে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে রোববার এক আলোচনায় তিনি এই ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
'হয়রানিমূলক মামলায় রাজবন্দি ও ধর্মীয় দীর্ঘ কারাবাস, নাগরিক সমাজের উদ্বেগ' বিষয়ে এ আলোচনার আয়োজন করে গণমতামত কেন্দ্র।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘হাজি সেলিমকে প্যারোলে মুক্তি দিতে পারেন, কিন্তু খালেদা জিয়াকে পদ্মা ব্রিজ দেখতে দিতে পারেন না। তাহলে আপনাদের বিচার কোথায়?’
পদ্মা সেতুতে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘চিন্তা করেন, আপনার (প্রধানমন্ত্রী) গাড়ি সামনে, পরে খালেদা জিয়ার গাড়ি, আর তার পেছনে তিনজন মুক্তিযোদ্ধা দাঁড়ায়া থাকবে। আস্তে আস্তে যাব। এখনও সময় আছে, অন্যদিকে পয়সা খরচ না করে এক পূর্ণিমার রাতে চলেন না যাই! এইটাই হবে বাংলাদেশ। তার আগে মুক্তি দিতে হবে... এনাদেরও (আলেম) নিয়ে যাই।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আপনার নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে চাই আমরা জনগণ। আপনি শেখ মুজিবের মেয়ে, আমার বন্ধু ওয়াজেদ সাহেবের স্ত্রী। আপনার প্রতি দরদ আছে আমাদের। দেশের মানুষও আপনাকে ভালোবাসে।’
আলেমদের মুক্তি না দিলে হাইকোর্ট ঘেরাওয়ের হুমকি
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আয়োজনের আগে-পরে হেফাজতে ইসলামের সহিংসতার ঘটনায় গ্রেপ্তার মামুনুল হকসহ অন্য আলেমদের মুক্তি চান জাফরুল্লাহ। মুক্তি না দিলে ১০ হাজার লোক নিয়ে হাইকোর্ট ঘেরাও করার কথাও বলেন তিনি।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ‘আমাদের একটা মাত্র দাবি, দুই দিনের মধ্যে সব আলেম, সব রাজনৈতিক কর্মী, খালেদা জিয়াসহ জামিনে মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় আপনারা তৈরি হোন, ১০ হাজার লোক নিয়ে হাইকোর্ট ঘেরাও করব। ওদের জামিন ছাড়া এবার হাইকোর্টে কোনো জামাত হবে না।’
মামুনুল হক গত বছর নারায়ণগঞ্জে নারীসহ আটক হওয়ার পর ধানমন্ডিতে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলনে তাকে ‘একজন জঘন্য’ ব্যক্তি বলেছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তবে রোববারের আলোচনায় তিনি বলেন, ‘মামুনুল হকের আইনি অধিকার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। তার পরিবারকে গত ১৫ মাসে একবার দেখা করতে দেয়া হয়েছে। মামুনুল হকসহ অন্য আলেমদের তাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে না দেয়া জালেমের কাজ।’
আলোচনায় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমি আলেম-ওলামাদের নিঃশর্ত মুক্তি চাই। এই মুক্তির জন্য লড়াইকে যতদূর নেয়া উচিত আমি ততদূর পর্যন্ত যেতেও রাজি আছি। আমি যাদেরকে যাদেরকে পারব, তাদেরকে নিয়েই এই লড়াই করতে চাই।’
আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহীম। বক্তব্য রাখেন ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর।