পুলিশ জনগণের প্রথম ও শেষ ভরসার জায়গা বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমদ।
রাজশাহীর পুলিশ লাইনস মাঠে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইজিপি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, পুলিশবাহিনী যেন জনগণের শেষ ভরসার স্থল হয়। আমরা বলে আসছি, পুলিশ দেশের জনগণের প্রথম ও শেষ ভরসার স্থল হতে চায়।’
আইজিপি বলেন, “আমরা জনগণের প্রথম এবং শেষ ভরসার স্থল হতে চাইলে দেশের সব স্তরের পুলিশ বাহিনীকে দেশের জন্য কাজ করতে হবে। আমাদের টার্গেট এ দেশের সাধারণ মানুষ। সাধারণ মানুষের সুখে-দুঃখে পুলিশকে পাশে থাকতে হবে। পুলিশের ‘ম্যান্ডেট’ এর বাইরে গিয়ে জনগণের জন্য কাজ করতে হবে। দিন-রাত পুলিশকে জনগণের সেবকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে।”
ইতিমধ্যে পুলিশ জনগণের সেবকের ভূমিকায় অবতীর্ণের উদাহরণ টেনে পুলিশপ্রধান বলেন, ‘রাত ৩টার দিকে সাহায্য চেয়ে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে বৃদ্ধা যখন ফোন করে বলে, আমার স্বামী কিছুক্ষণ আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছে। এটি কিন্তু পুলিশের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।
‘কিন্তু আমার পুলিশ বাহিনী গভীর রাতে অ্যাম্বেুলেন্স জোগাড় করে বৃদ্ধার স্বামীকে হাসপাতালে পৌঁছে দেয়। করোনা মহামারির সময় অক্সিজেনের সিলিন্ডার নিয়ে দিন-রাত করোনায় আক্রান্ত মানুষের পাশে ছিল এই মানবিক পুলিশ।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে। সেই সময়ের জন্য পুলিশ বাহিনীকে প্রস্তুত করতে হবে। এজন্য বাহিনীর সব স্তরের সদস্যকে সেইভাবে কাজ করতে হবে।’
ড. বেনজীর বলেন, ‘দেশটাকে আরও সামনে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব আমাদের। প্রধানমন্ত্রীর প্রজ্ঞায় দেশ অসংখ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে পদ্মা সেতু তৈরি করেছি। এরকম আরও দুটি পদ্মা সেতু তৈরির সক্ষমতা দেশের রয়েছে।’
আইজিপি বলেন, ‘যতই আমরা অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছি, ততই একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছি, একা হয়ে যাচ্ছি। সামাজিক বিচ্ছিন্নতার কারণে বর্তমানে নৈতিক অবক্ষয় বেশি হচ্ছে। ফলে ছাত্র শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা করছে। আবার এক শিক্ষক আরেক শিক্ষককে শায়েস্তা করতে ছাত্রকে লেলিয়ে দিচ্ছে।
‘নৈতিক অবক্ষয় থেকে দেশ, সমাজ তথা দেশের নাগরিকদের রক্ষা করতে হবে। এজন্য শুধু পুলিশ বাহিনী নয়, সবাইকে হাতে হাত রেখে নৈতিক এই অবক্ষয় রোধ করতে হবে।’
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার, পুলিশ অ্যাকাডেমির প্রিন্সিপাল (অ্যাডিশনাল আইজি) আবু হাসান মুহম্মদ তারিক, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো. আব্দুল বাতেন, আরএমপি কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দীকসহ আরএমপি ও রাজশাহী রেঞ্জ এবং বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।