ফরিদপুরের মধুখালীতে আওয়ামী লীগ নেতা মো. বাচ্চু শেখের বিরুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হামিদুর রহমানকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে উপজেলা কমপ্লেক্সে সোনালী ব্যাংকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় করা মামলার আসামিরা গ্রেপ্তারের কয়েক ঘণ্টার মাথায় জামিনে মুক্তি পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন প্রহৃত মুক্তিযোদ্ধা। তিনি বলেন, আমি এর বিচার আর কার কাছে দেব, আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে রাখলাম।’
৬৬ বছর বয়সী হামিদুর রহমান মধুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। তিনি মধুখালী পৌরসভার পশ্চিম গাড়াখোলার বাসিন্দা।
এ ঘটনায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও তিনজনকে আসামি করে মধুখালী থানায় মামলা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতেই তিন আসামিকে আটকের পর বুধবার সকালে আদালতে নেয়া হয়। এদিন বিকেলেই তারা জামিনে বের হন।
মামলায় বলা হয়, হামিদুর মঙ্গলবার রাতে উপজেলা কমপ্লেক্সে সোনালী ব্যাংকের নিচে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেখানে মধুখালী সরকারি আইনউদ্দিন কলেজ ছাত্রসংসদে ছাত্রদলের সাবেক ভিপি, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও বর্তমানে পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বাচ্চু শেখ, রবিউল মোল্যা, হাবিব শেখসহ কয়েকজন তার ওপর হামলা করেন।
তাকে মারধর ও গায়ের পাঞ্জাবি টেনে ছিঁড়ে ফেলা হয়। তখন তার কাছে থাকা আড়াই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায় হামলাকারীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী মধুখালী পৌর যুবলীগ নেতা মো. হামিদুল ইসলাম বাবুল বলেন, ‘উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক, মধুখালী সরকারি আইনউদ্দীন কলেজের সাবেক ভিপি এবং বর্তমান পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাচ্চুর হাতে নির্যাতিত হতে হলো উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হামিদুর রহমানকে। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক, মেনে নেয়া যায় না।’
এ বিষয়ে মধুখালীর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মির্জা প্রিন্স বলেন, ‘হামিদুর রহমান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। দল ক্ষমতায় থাকাকালীন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতাকে লাঞ্ছিত হতে হলো, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। ঘটনার প্রধান আসামি এক দিনেই জামিনে বেরিয়ে এলো, এই হলো রাজনৈতিক অবস্থা।’
মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় অভিযুক্ত মো. বাচ্চু শেখের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা হামিদুর রহমান বলেন, ‘এটা কোরোভাবেই মানতে পারছি না। সারা জীবন রাজনীতি করে শেষ বয়সে লাঞ্ছনা উপহার পেলাম। এটা শুধু আমার জন্য নয়, আওয়ামী লীগের জন্য লজ্জাজনক। এ ঘটনায় থানায় মামলা করেছি। আসামিরা বিএনপি ও হাইব্রিড। তারা এক দিনেই জামিনে বেরিয়ে এসেছে। আমি এর বিচার আর কার কাছে দেব, আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে রাখলাম।’
মধুখালী পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খন্দকার মোরশেদ রহমান লিমন বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক, যা বলার ভাষা নেই।’
এ বিষয়ে মধুখালী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এটি সত্যিই দুঃখজনক একটা ঘটনা। এ ঘটনায় সাংগঠনিকভাবে দলীয় সভায় আলোচনা করা হবে।
মধুখালী থানার ওসি মো.শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। মামলার পর পরই আমরা আসামি বাচ্চু শেখ, রবিউল মোল্যা ও হাবিব শেখকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠাই। আদালত থেকে জামিন দিলে পুলিশের কিছু করার থাকে না।’