বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কোরবানির পশুর হাট ‘মাতাবে’ গয়াল

  •    
  • ১ জুলাই, ২০২২ ১৩:২৬

কুমিল্লা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে গয়াল পালন করছেন খামারিরা। মূলত মাংসের জন্যই গয়াল পালন করা হয়। খামারিরা উদ্যোগ নিলে গয়ালের বংশ বিস্তারে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’ 

দক্ষিণ ভারতের ব্লকবাস্টার সিনেমা ‘বাহুবলি’ দেখেননি এমন বোধ হয় মানুষ কমই আছে। সিনেমার খল চরিত্রে অভিনয় করা রানা দাগগুবতি (সিনেমায় তার নাম বল্লা) একটি বনগরু বা গয়ালের সঙ্গে শক্তি প্রদর্শনে নামেন।

গয়ালটি বেশ কয়েকজনকে আকাশে উড়িয়ে রানা দাগগুবতিকে আঘাত করতে আসলে উল্টো গয়ালটির মাথায় আঘাত করে কুপোকাত করে ফেলেন রানা দাগগুবতি।

সিনেমায় এ দৃশ্য সম্ভব হলেও বাস্তবে গয়ালকে সহজে কুপোকাত করা খুবই কঠিন। কৌশলে গহিন বন থেকে ধরে আনা এসব বনগরু এবার কুমিল্লায় কোরবানির পশুর হাট মাতাবে বলে আশা করছেন খামারিরা।

এ বছর শখের বশে কয়েকজন খামারি গয়াল পালন করেছেন। তারা জানান, মাংসাশি গয়ালগুলো দিনভর ফোঁস ফোঁস করে। সতর্কতার সঙ্গে যত্নআত্তি করতে হয় এগুলোর। একটি প্রাপ্তবয়স্ক গরুর চেয়ে গয়ালের খাবারের বেশি প্রয়োজন হয়।

কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার মাঝিগাছা এলাকার ফাতেমা এগ্রোর পরিচালক সাকিউল হল আলভী বলেন, ‘গত কোরবানিতে তিনি দুটি গয়াল পালন করেছিলেন। ঘোষণা দিয়েছিলেন চলতি বছর আরও বেশি গয়াল পালন করে হাটে তুলবেন। কিন্তু বান্দরবান থেকে সংগ্রহ করতে পারেননি বলে এ বছর মাত্র একটি গয়াল পালন করেছেন।’

ফাতেমা এগ্রোর কর্মচারী মো. মোতালেব জানান, প্রথম দিকে গয়াল লতাপাতা ছাড়া অন্য কিছু খেতে চাইত না। কারণ বান্দরবানের গহিন বনে এরা ওগুলো খেয়েই বেড়ে ওঠে। লোকালয়ে আনার পর আস্তে আস্তে দেশীয় খাবারে অভ্যস্ত হয়।

মোতালেব বলেন, ‘আমরা খামারের গরুকে যে খাবার দেই, গয়ালকেও একই খাবার দেয়া শুরু করি। দিনে একটি গয়াল ৪ কেজি ভুসি, ৪ কেজি ধানের কুঁড়া, এক কেজি ভুট্টা, খইল ১ কেজি, গমের ছোলা ২ কেজি ও ১০ কেজি সবুজ ঘাস খায়। এখন গয়ালটির ওজন প্রায় ১১ মণ। হাটে নেয়ার পর দাম চাইব ৪ লাখ টাকা।’

নগরীর ২০ নম্বর ওয়ার্ডের লক্ষ্মীনগর এলাকার রাফি এগ্রোর স্বত্বাধিকারী জুয়েল আহমেদ জানান, বছর খানেক আগে তিনি একটি গয়াল সংগ্রহ করেন। বর্তমানে এর ওজন হবে অন্তত ১২০০ কেজি। ৮ লাখ টাকা হলে তিনি গয়ালটি বিক্রি করবেন।

জুয়েল বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ে গয়াল খাবার খায়। দিতে দেরি হলে এটি ফোঁস ফোঁস করে। দেয়ালের সঙ্গে মাথা ঠুকে আর লাফালাফি করে।’

কুমিল্লা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে গয়াল পালন করছেন খামারিরা। কতটি গয়াল পালন হচ্ছে এ মুহূর্তে আমাদের কাছে তেমন কোনো সংখ্যা নেই। মূলত মাংসের জন্যই গয়াল পালন করা হয়। খামারিরা উদ্যোগ নিলে গয়ালের বংশ বিস্তারে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’

প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আরও জানান, জেলায় গত কোরবানিতে ৩৬৩টি হাটে বিক্রি হয়েছে ২ লাখ ২৮ হাজার ৬৪২টি পশু। সে বছর উদ্বৃত্ত পশুর সংখ্যা ১১ হাজার ৬২৫টি।

আসন্ন ঈদে ৩৩ হাজার ৯৩০ খামারি পশু পালন করেছেন। এ বছর পশুর সম্ভাব্য চাহিদা ২ লাখ ৪৮ হাজার। চাহিদা মিটিয়ে এ বছর ১০ হাজার ৪৩২টি পশু উদ্বৃত্ত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এ বিভাগের আরো খবর