পদ্মা সেতুকে বিতর্কিত করতে পরিকল্পিতভাবে রেঞ্জ দিয়ে নাট ঢিলা করে হাত দিয়ে খুলে মাহদি হাসান ও তার বন্ধুরা ভিডিও করে ফেসবুকে ছাড়েন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মাহদিকে বুধবার রাতে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ- ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। তার বাড়ি মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী থানায় হলেও ঘটনার পর থেকে লক্ষ্মীপুরে আত্মগোপনে ছিলেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিটিটিসি প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু আমাদের অহংকারের বিষয়, গর্বের বিষয়, আমাদের সক্ষমতার প্রতীক। শুরু থেকেই এই পদ্মা সেতু ঘিরে নানা ধরনের চক্রান্ত ছিল, এমনকি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ব্যাহত করতে নাশকতার গুঞ্জনও ছিল।’
গ্রেপ্তারকৃত মাহদি হাসান তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসার ছাত্র ছিলেন। তিনি ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলেও জানায় পুলিশ। পরে কবি নজরুল কলেজে ভর্তি হলেও তার রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, ‘পদ্মা সেতুকে হেয় করতে কিছু একটা করবে- আগের দিন রাতেই মাহদি তার দুই ইউটিউবার বন্ধুকে নিয়ে এমন একটি পরিকল্পনা করেন। ২৬ তারিখ পদ্মা সেতু সাধারণের জন্য খুলে দেয়ার দিন মাহদি ও তার দুই ইউটিউবার বন্ধু মোটরসাইকেলে করে ভোররাতেই মাওয়া প্রান্তে অবস্থান করেন। সেতু খুলে দেয়ার পর পরই সেতু পার হয়ে তারা অন্য প্রান্তে চলে যান এবং ফরিদপুরে গিয়ে কিছু সময় অবস্থান করেন।
‘সকালে সেতুতে মানুষের ভিড় থাকায় তারা নাট খোলার সুযোগ পাচ্ছিলেন না। পরে দুপুর বেলায় তারা তিনজন আবার সেতুতে ফিরে আসেন এবং সুযোগ বুঝে সঙ্গে থাকা রেঞ্জ দিয়ে নাট খুলে ভিডিও তৈরি করেন। তার দুই ইউটিউবার বন্ধু সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। পরে যখন তারা বুঝতে পারেন যে এ জন্য সমালোচনা শুরু হয়েছে, তখন ভিডিও ডিলিট করে আত্মগোপনে চলে যান তারা।’
সিটিটিসি প্রধান বলেন, “মাহদি যদিও প্রথমে দাবি করেন যে তিনি হাত দিয়েই নাট খুলেছেন, না বুঝেই ভিডিও করেছেন। কিন্তু তিনি তার ভিডিওতে বারবার বলছিলেন ‘আমি কোনো রেঞ্জ ব্যবহার করিনি’। তার এই রেঞ্জ ব্যবহার না করার কথাটায় আমরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি যে তিনি অবশ্যই রেঞ্জ ব্যবহার করেছিলেন। না হলে বারবার নিজে থেকে রেঞ্জের কথা বলতেন না। তখন বিশদ জিজ্ঞাসাবাদে তিনি সঙ্গে রেঞ্জ নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন।’
মাহদির সঙ্গে থাকা ইউটিউবার দুই বন্ধু এখনও পলাতক। তাদের ধরতে অভিযান চলছে বলে জানান মে. আসাদুজ্জামান।
মাহদির বিরুদ্ধে পদ্মা সেতু উত্তর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা করা হয়েছে এবং তাকে ওই থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান সিটিটিসি প্রধান।