সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি হচ্ছে বলে স্বীকার করেছেন সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আব্দুস শহীদ। তিনি বলেন, ‘চুরি বলব না, তবে আমাদের প্রকল্পে দুর্নীতি হচ্ছে।’
বুধবার রাজধানীর লেকশোর হোটেলে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশন যৌথভাবে আয়োজিত এক সংলাপে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘সরকারি অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়ন’ বিষয়ে সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য এনামুল হক। প্যানেল আলোচক ছিলেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি রিজওয়ান রহমান, পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম মাসরুর রিয়াজ।
আব্দুস শহীদ বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তবায়নে অপচয় হচ্ছে। প্রকল্পের পরিচালকেরা এমনিতেই গাড়ি পান, এরপরও অনেক পরিচালক নতুন গাড়ি কিনছেন। এমনকি প্রকল্প এলাকায় তাকে প্রতিদিন যেতে হয় না। ফলে যেখানে তেলের দাম নিলেই যথেষ্ট, সেখানে তারা নতুন গাড়ি কিনছেন।’
এসব বন্ধের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান নবম সংসদের সরকারদলীয় চিফ হুইপ।
সংসদের বিভিন্ন স্থায়ী কমিটিগুলো শক্তিশালী করা হয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কোন প্রকল্প কতটা বাস্তবায়িত হচ্ছে, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ কমিটির বৈঠকে পেশ করা হচ্ছে।’
প্রকল্পের ফল আগে বোঝা যায় না উল্লেখ করে এ সংসদ সদস্য বলেন, ‘এখন প্রকল্প অ্যাডহক ভিত্তিতে হচ্ছে। ফলে প্রকল্পের আগে বোঝা যায় না এর ফল কী হবে; বরং প্রকল্প বাস্তবায়নের পরে তা বোঝা যায়। কাঠামো পরিকল্পনা থাকলে এসব সমস্যা হতো না।‘প্রকল্প প্রণয়নের সময় প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই বা কস্ট-বেনিফিট অ্যানালাইসিস হচ্ছে না। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় মানুষের যাপিত জীবনের পরিবর্তনের বিষয়টি আমলে নেয়া হচ্ছে না।’
বাংলাদেশের মতো ছোট দেশে এটা করা খুব কঠিন নয় বলে মত দেন তিনি ।
অনুষ্ঠানে মূল উপস্থাপনা তুলে ধরেন সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তবায়নের কাঠামো নির্ধারণ করা গেলে অর্থ ও সময় সাশ্রয় হবে। এ ক্ষেত্রে পদ্মা সেতু আমাদের জন্য বড় নজির, যা নির্ধারিত (বর্ধিত) সময়ের মধ্যে শেষ করা গেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকারের আরও বেশ কটি বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্য আছে। কাঠামো নির্ধারণ করা গেলে এগুলো সুশাসনের সঙ্গে বাস্তবায়ন করা যাবে।’
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। তিনি বলেন, ‘যথেষ্ট যোগ্যতা ও মানসম্পন্ন প্রকল্প পরিচালক নেয়া উচিত। যদি সম্ভব হয় তাহলে তাদের জন্য আলাদা কোনো ক্যাডার তৈরি করা যায় কি না তা নিয়েও ভেবে দেখা উচিত।
‘প্রকল্প পরিচালকের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে হবে। একটা প্রজেক্টের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রকল্প পরিচালক যেন প্রকল্পের সঙ্গে থাকে।’