বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পদ্মায় সেতু: অতীত নয়, সামনে তাকাতে চায় বিশ্বব্যাংক

  •    
  • ২৫ জুন, ২০২২ ১৫:৩৬

আমরা এখন সামনে তাকাতে চাই। কীভাবে এ সেতু মানুষের কাজে আসবে সেটা দেখতে মুখিয়ে আছি। সবাই এটা নিয়ে আনন্দিত। এ কারণেই আমরা সবাই এখানে এসেছি: বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন

পদ্মা সেতু প্রকল্পে সবচেয়ে বেশি অর্থ দেয়ার কথা ছিল যে বিশ্বব্যাংকের, সেই সংস্থাটির বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেছেন, তারা এখন ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে চান।

সেতু হওয়ায় বিশ্বব্যাংকও আনন্দিত জানিয়ে তিনি বলেছেন, এ জন্য বাংলাদেশকে অভিনন্দনও জানাচ্ছেন তারা।

শনিবার পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি হয়ে যোগ দেন টেম্বন। মাওয়ার জাজিরা প্রান্তে সুধী সমাবেশের পর গণমাধ্যমকর্মীরা তাকে এই সেতু প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন করেন।

সেতুটি নির্মাণে শেষ পর্যন্ত থাকতে না পেরে বিশ্বব্যাংক অনুতপ্ত কি না- এমন প্রশ্নে টেম্বন সরাসরি জবাব দেননি। তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক পুরো বিষয়টিকে স্বীকৃতি দিচ্ছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়ায় বিশ্বব্যাংক আনন্দিত। এ জন্য বাংলাদেশকে বিশ্বব্যাংক অভিনন্দন জানাচ্ছে। সেতু নির্মাণ শেষ হয়েছে সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এখানে সেটাই উদযাপন করতে এসেছি। এ সেতু নিয়ে বাংলাদেশের মানুষ খুবই গর্বিত। একই সঙ্গে আমরাও গর্বিত। সেটাই আসল কথা।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এখন সামনে তাকাতে চাই। কীভাবে এ সেতু মানুষের কাজে আসবে সেটা দেখতে মুখিয়ে আছি। সবাই এটা নিয়ে আনন্দিত। এ কারণেই আমরা সবাই এখানে এসেছি।’

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার পদ্মা সেতু নির্মাণে যখন উদ্যোগ নেয়, তখন ঋণচুক্তি করা হয় দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা, আইডিবির সঙ্গে। ২০১১ সালের এপ্রিলে ২৯০ কোটি ডলারের এই প্রকল্প করতে ঋণচুক্তি করে সরকার। এর মধ্যে ১২০ কোটি ডলার দেয়ার কথা ছিল বিশ্বব্যাংকের।

তবে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসএনসি লাভালিনকে কাজ দেয়ার ক্ষেত্রে দুর্নীতিচেষ্টার অভিযোগ হয়েছে- এমন একটি অভিযোগ তোলে দাতা সংস্থাটি। বলা হয়, এই দুর্নীতিচেষ্টায় লাভালিন ছাড়াও সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা জড়িত।

সে সময় বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে এসে তদন্ত করেন। তারা আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা ও তাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। কিন্তু দুর্নীতি দমন কমিশন তার বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ না পাওয়ার কথা জানিয়ে এই ব্যবস্থায় রাজি হয়নি।

যদিও সে সময়ের সেতুসচিব মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে ২০১২ সালের ২৩ জুলাই আবুল হোসেন মন্ত্রিত্ব ছাড়েন। সরে যান প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান। তবে তার পদত্যাগেও বিশ্বব্যাংক এই প্রকল্পে ফেরেনি।

ওই বছরের জুনেই প্রকল্প থেকে সরে যায় দাতা সংস্থাটি। পরে জাইকা, এডিবি, আইডিবি সরে দাঁড়ালে প্রকল্প নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই বছরের ৪ জুলাই জাতীয় সংসদে নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন।

এই ঘটনায় কানাডার আদালতে এসএনসি লাভালিনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। সেতুর কাজ শুরুর দুই বছর পর ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে কানাডার আদালত রায় দেয় পদ্মা সেতুতে দুর্নীতিচেষ্টার অভিযোগ বায়বীয়, গালগপ্প।

সে সময় কানাডার পত্রিকা টরন্টো স্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়, রায়ের আদেশে বিচারক লেখেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যে তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছিল, তা জল্পনা, গুজব আর জনশ্রুতি ছাড়া কিছুই না। কানাডার সুপিরিয়র কোর্টের বিচারক ইয়ান নর্দেইমার এ রায় দেন।

প্রধানমন্ত্রী নানা সময় বলে এসেছেন, গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মুহম্মদ ইউনূসকে তার পদ ছাড়তে হওয়ায় তিনি ও তার বলয়ে থাকা ব্যক্তিরা বিশ্বব্যাংককে দিয়ে এই কাজ করিয়েছেন। ড. ইউনূসের সঙ্গে সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে এবং হিলারি নিজেও চাপ দিয়েছেন বিষয়টি নিয়ে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি জানিয়েছেন, বিশ্বব্যাংকের পদ্মা সেতুতে যে অর্থ দেয়ার কথা ছিল, সংস্থাটি সেই পরিমাণ অর্থ পরে অন্য প্রকল্পে দিয়েছে।

পদ্মা সেতুর অর্থনৈতিক সম্ভাবনা নিয়ে টেম্বন বলেন, ‘এ সেতুর কারণে বাণিজ্য বাড়বে। এছাড়াও সেতুটি বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের জনগণের জন্য আরও অনেক সুবিধা নিয়ে আসবে যা দারিদ্র দূরীকরণে সহায়তা করবে।’

বাংলাদেশর উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের ভূমিকাও তুলে ধরেন দেশটির কান্ট্রি ডিরেক্টর। বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক ১৯৭১ সাল থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নের সহযোগী। আমরা বাংলাদেশকে সবসময় সমর্থন করে এসেছি। ২০১১ সাল থেকে বিশ্বব্যাংক ২২ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশকে, তারা খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।’

এ বিভাগের আরো খবর