পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী মঞ্চ পাঠশালা বলে মনে হয়েছে এক স্কুলছাত্রের। বড় পর্দায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখে ফিরে নিজের এমন অনুভূতির কথা জানায় হামজা ইসলাম নামের এই কিশোর।
ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র হামজা নিউজবাংলাকে বলে, ‘যেদিন থেকে আমাদের স্কুল থেকে শুনেছি বড় পর্দায় পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখতে নিয়ে যাওয়া হবে সেদিন থেকেই আনন্দ কাজ করছে।
‘সকালে আমাদের র্যালি করে ঠাকুরগাঁও বড় মাঠে নিয়ে যাওয়া হয়। সবাই মিলে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনেছি। মনে হয়েছে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী মঞ্চ ছিল আমাদের আজকের পাঠশালা।’
হামজা আরও বলে, ‘আমরা জানতে পেরেছি নিজেদের অর্থায়নে তৈরি পদ্মা সেতু কীভাবে মানুষকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। সেতু তৈরির পেছনের গল্প এবং এই সেতু দেশের কোন কোন জেলাকে মিলিত করেছে তাও জেনেছি।
‘আমরা যখন উচ্চ পর্যায়ের পড়াশোনা, গবেষণা করব তখন আজকের এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আমাদের অনেক উপকারে আসবে।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখেছে সিএম আইয়ুব বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী নুসরাত পারভীন।
নুসরাত বলে, ‘এই সেতু আমাদের শুধু আনন্দে ভাসায়নি, আত্মবিশ্বাসীও করেছে। দেশে আরও মজবুত অবকাঠামো ও স্থাপনা নির্মাণের স্বপ্ন দেখিয়েছে। আমার কাছে মনে হয়, এটা কেবল শুরু। আমরা নিজেদের অর্থায়নের আরও অনেক কিছু নির্মাণ করব।’
সি এম আইয়ুব বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিপেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ২৪ বছর আগে যমুনা সেতুর উদ্বোধন হয়েছে। নতুন প্রজন্ম সে কথা বইয়ে পড়ে, বড়দের কাছ থেকে শুনে জেনেছে। পদ্মা সেতু তাদের সময়ে দৃশ্যমান।
‘আমরা বিশ্বাস করি, শিক্ষার্থীরা দেশের এ বিজয় মনে রাখবে। এই আয়োজন থেকে শিক্ষা নেবে, কীভাবে মনোবল ও বিশ্বাস বজায় রেখে স্বপ্ন পূরণ করতে হয়।’
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন শিক্ষার্থীদের আত্মপ্রত্যয়ী হিসেবে গড়ে তুলবে বলে মনে করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু তাহের মো. শামসুজ্জোহা।
তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের এই গৌরবোজ্জ্বল দিনে আমরা শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করেছি। আমরা চেয়েছি শিক্ষার্থীরা এই দিনটি উপভোগ করুক। নিজেদের আত্মপ্রত্যয়ী হিসেবে গড়ে তুলুক৷ তারাও স্বপ্ন দেখুক এবং স্বপ্নের বাস্তব রূপ কেমন হয় সেটা জানুক।’
সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে ঠাকুরগাঁওয়ের বড় মাঠে জমকালো অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। নানান শ্রেণি-পেশার মানুষ শোভাযাত্রা নিয়ে সেখানে জড়ো হয়। রং মেখে, আতশবাজি ফুটিয়ে উল্লাস করেন স্থানীয়রা।
সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মাহাবুব রহমান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুহাম্মদ সাদেক কুরাইশি, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অরুনাংশ দত্ত টিটো।