বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পদ্মার ঘাটে সিরিয়াল বাণিজ্যে জড়িতদের মাথায় হাত!

  •    
  • ২৩ জুন, ২০২২ ১৮:১৬

মাসখানেক আগেও ঘাটে দীর্ঘ অপেক্ষায় থাকা ট্রাকের চালক-শ্রমিকদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগের সুযোগ নিয়ে এক দল ব্যক্তি টাকার বিনিময়ে ফেরিতে ওঠার সিরিয়াল পাইয়ে দিতেন। প্রশাসনের সঙ্গে যোগসাজশে এই অনিয়ম চলত বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে এখন আর দালালদের দৌরাত্ম্য চোখে পড়ে না।

পদ্মা সেতুর কারণে বদলে যাচ্ছে মাওয়া-জাজিরা প্রান্তের ফেরি ও লঞ্চঘাটসংশ্লিষ্ট বহু মানুষের পেশা। এরই মধ্যে ঘাট এলাকার হোটেল ব্যবসায়ী, সাধারণ হকারসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বিকল্প পেশার দিকে ঝুঁকছেন।

পদ্মা সেতুর কারণে নদীর দুই প্রান্তের ফেরিঘাটে যানবাহনের সিরিয়াল বাণিজ্যে জড়িতরাও বিকল্প কাজের খোঁজে এখন ব্যস্ত। বাংলাবাজার ঘাটের আড়াই শতাধিক ‘দালাল’ খুঁজছেন স্বাভাবিক রোজগারের পথ।

বাংলাবাজার ঘাটে সম্প্রতি গিয়ে দেখা যায়, বেশ কিছু দিন ধরেই দালালদের তেমন তৎপরতা নেই। হাঁকডাক নেই যাত্রী ও পরিবহন পারাপারের। ঘাটে ট্রাকের চিরচেনা দীর্ঘ লাইনও চোখে পড়েনি।

মাসখানেক আগেও ঘাটে দীর্ঘ অপেক্ষায় থাকা ট্রাকের চালক-শ্রমিকদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগের সুযোগ নিয়ে এক দল ব্যক্তি টাকার বিনিময়ে ফেরিতে ওঠার সিরিয়াল পাইয়ে দিতেন। প্রশাসনের সঙ্গে যোগসাজশে এই অনিয়ম চলত বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে এখন আর দালালদের দৌরাত্ম্য চোখে পড়ে না।

বাংলাবাজার ফেরিঘাটের ২ নম্বর পন্টুনের পাশের চা-বিস্কুটের দোকানি আফতাব ব্যাপারী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মাসখানেক আগেও এই ঘাটে শত শত ট্রাক আটকে ছিল। ঘাট এলাকায় দালালরা প্রশাসনের লোকজনের সহযোগিতায় অনেক ট্রাক আগে পারাপার করে দিত। টাকার বিনিময়ে এ কাজ করত দালালরা। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই তারা ঘাটে থাকত।

‘এ নিয়ে অনেক সময় ট্রাকচালক-শ্রমিকদের সঙ্গে দালালদের হাতাহাতিও হয়েছে। তবে এখন আর তাদের দেখা যায় না।’

স্থানীয় এক ব্যক্তি নাম না প্রকাশ করার শর্তে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এসব ঘাটে দুই থেকে আড়াই শ দালাল ছিল। পরিবহন, ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোট ঘাট এলাকায় তারা ঘুরঘুর করত। তবে পদ্মা সেতু হওয়ার কারণে এখন আর তারা নেই।

‘মাঝেমধ্যে দু-তিনজন ঘাটে এলেও কাজকর্ম নেই। সবাই অন্য পেশায় যাওয়ার চেষ্টা করছে।’

নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রের দাবি, বাংলাবাজার ফেরিঘাট এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ফেরিতে যাত্রী পারাপারের টোল আদায়ের দায়িত্বে ছিলেন শিবচরের ইয়াকুব ব্যাপারী। প্রতিটি ঈদে ও বিশেষ সময়ে তার পক্ষে টাকা তোলার দায়িত্বে ছিলেন শতাধিক কর্মী। অনেক সময় তারা যাত্রীদের সঙ্গে মারামারির ঘটনাও ঘটিয়েছেন। মূলত এদের অধিকাংশই বিভিন্ন সময় ঘাট এলাকায় যানবাহন পারাপারের জন্য অতিরিক্ত অর্থ আদায় করতেন।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইয়াকুব ব্যাপারী কথা বলতে রাজি হননি। তবে তিনি বলেন, ‘এখন আর ঘাটও নাই, আমার কোনো লোকজনও ঘাটে থাকবে না।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ‘দালাল’ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ঘাটে কিছু লোক কাজকর্ম করে বাঁচতাম। এখন আর সেই সুযোগ নাই। সেতু চালুর পর লোকজনও আর আসবে না। আমাদের আসতেও হবে না। এ কারণে ভিন্ন পথে ব্যবসা খুঁজছি।‘

আগামীতে দোকান বা ফেরি করে মালামাল বিক্রির পরিকল্পনা আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ঘাটে আমরা কোনো মানুষের কাছ থেকে জোর করে টাকা নিই নাই। উপকার করে টাকা কামাইছি।’

বাংলাবাজার ঘাট এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকা পুলিশ পরিবহন পরিদর্শক আশিকুর রহমান দাবি করেন, পুলিশ কখনই সিরিয়াল বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত ছিল না।

তিনি বলেন, ‘স্থানীয় লোকজন ট্রাকচালকদের সঙ্গে কী করল, না করল সেটা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। কোনো অনিয়মের অভিযোগ পেলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি।’

এ বিভাগের আরো খবর