পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শিক্ষার্থীদের দেখার সুযোগ করে দিতে আগামী শনিবার কোনো ক্লাস না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েট কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানিয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি।
বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ফোরকান উদ্দীন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
সাধারণত প্রায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকে। তবে বুয়েটের সাপ্তাহিক ছুটি বৃহস্পতি ও শুক্রবার।
বুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিদপ্তরের (ডিএসডব্লিও) পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, ‘গত ১৮ তারিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ব্যাচের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে একটা আবেদন এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি তারা দেখতে চায়। তারা সেদিন ক্লাস বন্ধ রাখার আবেদন জানিয়েছে।’
‘শিক্ষার্থীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাই আমরা উদ্বোধনের দিন সকল ক্লাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাকি সব কার্যক্রম চলবে।’
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে এদিন বুয়েটে মিষ্টি বিতরণ করা হবে বলেও একটি সংবাদ ফেসবুকে ছড়িয়েছে। এর সত্যতা সম্পর্কে জানতে চাইলে মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এ রকম কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
‘তবে আমি শুনেছি, আমাদের শিক্ষককদের একটি ক্লাব আছে। সেখানে সেদিন মিষ্টি থাকবে। যারা ক্লাবে যাবে তারা মিষ্টি খেতে পারবে। আর হলের প্রাধ্যক্ষরা আবাসিক শিক্ষার্থীদের মিষ্টি বিতরণ করবে কি না সেটি তাদের বিষয়।’
আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পরই পদ্মা সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করে। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় ফেরার পর এই সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে যায় তারা। ঋণচুক্তি হয় বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে।
তবে দুর্নীতির চেষ্টার অভিযোগ নিয়ে বিশ্বব্যাংকের এই প্রকল্প থেকে সরে যাওয়া, দাতা সংস্থাটির এই অভিযোগ তোলার পেছনে দেশের একটি শ্রেণির হাত থাকার অভিযোগ নিয়ে শুরু থেকেই তর্ক-বিতর্ক চলতে থাকে।
পরে সরকার নিজ অর্থে সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। এর মধ্যে ২০১৭ সালে কানাডায় করা একটি মামলার রায়ে বিচারক বিশ্বব্যাংকের অভিযোগকে ‘গালগপ্প’ বলে উড়িয়ে দেয়।
এসব ঘটনায় পদ্মা সেতু কেবল একটি স্থাপনা হয়ে থাকেনি, এর সঙ্গে রাজনীতিও জড়িয়ে গেছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ একে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের প্রতীক হিসেবে দেখাতে চাইছে। দেশীয় অর্থায়নে এর আগে এত বড় প্রকল্প কখনও হয়নি। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন নিজ অর্থে সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন, তখন অর্থনীতিবিদদের একটি অংশ বলেছিলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এই চাপ সামলাতে পারছে না।
এসব নানা ঘটনার কারণে জমকালো আয়োজনে সেতুর উদ্বোধন করতে যাচ্ছে সরকার।