স্ত্রীর মর্যাদা ও জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মহিলা আওয়ামী লীগের এক নেতা। এ সময় সন্তানের স্বীকৃতির দাবিও এসেছে।
কুমিল্লা নগরীর এক পার্টি সেন্টারে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি এই সংবাদ সম্মেলন করেন।
নিশাত আহম্মেদ খান নামের ওই নেতা কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় মহিলা সংস্থার কুমিল্লা জেলা শাখার সদস্য।
তিনি যাকে স্বামী হিসেবে দাবি করছেন তার নাম মিনহাজুর রহমান। তবে প্রবাসী মিনহাজ সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, ২০১৩ সালে মিনহাজ ইতালি থেকে দেশে আসেন। এর পর তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। ওই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর তাদের বিয়ের দিন ঠিক হয়। এটি তাদের দুজনেরই দ্বিতীয় বিয়ে।
বিয়ের আগ মুহূর্তে মিনহাজ জানান, তার নামে মামলা আছে। সেই মামলা নিষ্পত্তি হতে দুই মাস সময় লাগবে। তাই তিনি এখন বিয়ে রেজিস্ট্রি করতে পারছেন না।
পরে হুজুর ডেকে ঘরোয়াভাবে তাদের বিয়ে হয়। এর পর তারা একসঙ্গে থাকা শুরু করেন।
বিয়ের ১৯ দিন পর মিনহাজ ইতালি ফিরে যান। ২০১৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর দেশে এসে বিভিন্ন কাগজে নিশাতের সই নিয়ে জানান, তাদের বিয়ের রেজিস্ট্রি হয়ে গেছে।
নিশাত বলেন, ‘বিয়ের আগে মিনহাজের বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও মানবপাচারের মামলার কথা আমি জানতাম না। বিয়ের পর মিনহাজ ইতালি থেকে ইংল্যান্ডে গিয়ে নতুন ব্যবসা শুরুর কথা জানায়। ব্যবসার কথা বলে সে আমার ঠিকাদারি ব্যবসার সব টাকা নিয়ে নেয়।
‘স্থাবর সম্পদের বিপরীতে টাকা তুলে মিনহাজকে টাকা দেই। এরপরও মিনহাজ বিভিন্ন সময় আমাকে টাকা পাঠানোর জন্য চাপ দিতো। এর মাঝে আমি আওয়ামী লীগের ইতালিতে থাকা এক নেতার মাধ্যমে জানতে পারি, ইতালির আদালতে মিনহাজের আট বছর নয় মাসের কারাদণ্ড ও ৫ লাখ ৫৪ হাজার ইউরো জরিমানা হয়েছে।’
নিশাত আরও বলেন, ‘মিনহাজ আমার মাধ্যমে প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক থেকে ৬ থেকে ৭ কোটি টাকা লোন নেয়ার চেষ্টা করে। তবে এর মাঝে মিনহাজের প্রথম স্ত্রী উম্মে সালমা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে। তিনি জানান, মিনহাজ সালমা ও সালমার ভাইয়ের নামে লোন করে অনেক টাকা নিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত সে কোনো টাকা শোধ করেনি।
‘এরপর আমি আমার টাকা ফেরত চাইলে মিনহাজ আমার নামে মিথ্যা মামলা ও বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া শুরু করে। তারপর হঠাৎ সে আমার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।’
মহিলা আওয়ামী লীগের এই নেতা জানান, তার চার বছর দুই মাস বয়সী একটি ছেলে আছে। সে হার্টের গুরুতর সমস্যায় ভুগছে। ছেলের চিকিৎসার জন্য প্রচুর টাকা খরচ হচ্ছে। ডাক্তার শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি মিনহাজ অপপ্রচার চালাচ্ছে যে আমি নাকি তার স্ত্রী না। স্ত্রী না হলে তার পাসপোর্টসহ সব কাগজে আমার নাম কীভাবে এলো?
‘আমি এ বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সেই সঙ্গে নিজের জীবনের নিরাপত্তা দাবি করছি।’
তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মিনহাজ। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের বিয়ে হয়নি। সে আমাদের বিয়ের একটা ছবিও দেখাতে পারবে না। আমি যখন দেশের বাইরে তখন কীভাবে বিয়ে হয়? বাচ্চাটা সে কিনে এনেছে।
‘তার সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল। সেখান থেকে একটা সম্পর্ক তৈরি হয়। সেই সম্পর্কের জেরে আমার সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য বিয়ের কাগজ ও কাবিননামা তৈরি করে। আমার কুমিল্লা ও ঢাকার বাড়িও দখল করেছে। এ পর্যন্ত আমি চারটা মামলা করেছি। আপনারাও তদন্ত করেন। তাহলে আসল সত্যটা বেরিয়ে আসবে।’