চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার এক সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ফ্যামিলি কার্ড নিয়ে অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে।
পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম ভূঁইয়া নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছন।
তিনি বলেন, কাউন্সিলর শেফালী খাতুনের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে। তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে তার কাউন্সিলর পদ বাতিলের জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করা হবে।
স্থানীয়রা বলছেন, যেখানে একটি পরিবার একটি ফ্যামিলি কার্ড পাওয়ার কথা সেখানে এক পরিবারের তিনজনকে কার্ড দেয়া হয়েছে। একাধিক স্বচ্ছল ব্যক্তিকে দুটি করে কার্ড দেয়া হয়েছে। ফ্যামিলি কার্ড পেয়েছেন প্রবাসীও।
এসব কার্ডে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর শেফালী খাতুনের স্বাক্ষর ও সিল আছে।
বুধবার রাতে বিষয়টি জানাজানি হলে শেফালীকে তলব করেন পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। যদিও শেফালীর দাবি, তাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হচ্ছে।
নিউজবাংলা খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ গোরস্তান পাড়ার মোতাহার হোসেন এবং তার দুই ছেলে সৈয়দ মো. পারভেজ হোসেন ও সৈয়দ মো. মুরাদ হোসেন তিনজনই ফ্যামিলি কার্ড পেয়েছেন। তিনজনেরই দুইটি করে কার্ড আছে।
তাদের মধ্যে মুরাদ কুয়েত প্রবাসী। তার একটি কার্ডে নতুন ছবি, আরেকটি কার্ডে পুরাতন ছবি দেয়া। পারভেজের একটি কার্ডে ছবি আছে, আরেকটিতে নেই। দুই কার্ডেই একই মোবাইল নম্বর দেয়া।
কুয়েত প্রবাসী মুরাদের নামে করা দুইটি ফ্যামিলি কার্ড
এই ওয়ার্ডের হাসনা জাহানের নামেও দুইটি ফ্যামিলি কার্ড দেয়া হয়েছে। দুই কার্ডের মোবাইল নম্বর এক, তবে ছবি একটি কার্ডে নতুন, আরেকটিতে পুরাতন।
একই ছবি দেয়া দুইটি ফ্যামিলি কার্ড পাওয়া গেছে এই এলাকার তাহমিনা খাতুনের কাছেও।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুইটি কার্ডধারী একাধিক ব্যক্তি জানান, কাউন্সিলর শেফালীর সঙ্গে তাদের ভালো সম্পর্ক থাকায় তিনি দুইটি কার্ড দিয়েছেন। এর জন্য কোনো টাকাপয়সা নেননি।
এমন ৪৪টি কার্ড পাওয়া গেছে যেগুলোতে নানা রকমের অনিয়ম হয়েছে। প্রতিটি কার্ডে শেফালীর স্বাক্ষর ও সিল আছে।
এর বাইরের দক্ষিণ গোরস্তান পাড়ার রবিসন খাতুনের একটি কার্ড পাওয়া গেছে। রবিসন মারা গেছেন তিন মাস আগে। তার মৃত্যুর পরও এই কার্ড দিয়ে টিসিবির পণ্য কেনা হচ্ছে।
পৌরসভা বলছে, কার্ডধারী কারো মৃত্যু হলে তার কার্ড আর ব্যবহারযোগ্য হবে না। পরিবারের কেউ আবেদন করলে নতুন করে সেই পরিবারের কোনো সদস্যকে ফ্যামিলি কার্ড দেয়া হবে।
টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড নিয়ে এমন অভিযোগের বিষয়ে শেফালী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি এ ধরনের কাজ করিনি। আমাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হচ্ছে।’