জামালপুরে যমুনা নদীর পানি ক্রমেই বেড়ে চলছে। এতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ছয় উপজেলার প্রায় ৭০ হাজার মানুষ।
বুধবার বেলা ২টার দিকে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনার পানি বিপৎসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার তথ্য জানিয়েছে জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড।
গত ছয় দিনের বন্যায় জেলার মেলান্দহ উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়ন, ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলি, বেলগাছা, কুলকান্দি, সাপধরী, নোয়ারপাড়া ইউনিয়ন; দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিকাজানী, বাহাদুরাবাদ, চুকাইবাড়ী ইউনিয়ন; বকশিগঞ্জ উপজেলার নিলক্ষিয়া এবং মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়িসহ ছয় উপজেলার ৩৫টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিকাজানী ইউনিয়নের চরডাকাতিপাড়ার আবুল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাড়ির চারদিকে কয়েক দিন ধইরে পানি। যাগর বাড়ি একটু নিচে তাগর বাড়িত পানি উঠছে। অনেক লোক আশ্রয়কেন্দ্রে গেছে। আঙ্গর ঘরে পানি উঠলে আঙ্গরেও বাড়ি ছাড়ন লাগব।’
একই এলাকার নাজমা বেগম বলেন, ‘কয়ডা দিন থাইকে বন্যা হইতাছে এডা সরকারি লোক আইসে আঙ্গর কোনো খোঁজখবর নিল না। এডা ত্রাণ দিল না। বাড়িঘর ডুবে নাই তাই রান্না কইরে খাবার পারি, পানি বাড়লে কী করমু?’
জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ছয় উপজেলার ১৫৫টি গ্রামের ৬৯ হাজার ৭৬২ জন বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছেন। জেলার ছয়টি আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন ৫ হাজার ১৭৫ জন। এ ছাড়া বন্যায় ৪ হাজার ১০ হেক্টর জমির ফসল ও ২১৫ মিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৪৯০ টন চাল, নগদ ৫ লাখ ৫৩ হাজার টাকা এবং চার হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ আছে। এর মধ্যে কিছু বিতরণ করা হয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী পরে আরও বিতরণ করা হবে।’
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ বলেন, ‘ভারতের আসাম ও মেঘালয়ে পাঁচ দিন বৃষ্টিপাত হবে না। তাই যমুনা নদীর পানি কমার সম্ভাবনা রয়েছে।’