সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বেড়ে তলিয়ে গেছে চরাঞ্চলের নিচু জমি। টানা কয়দিন ধরে বিপৎসীমার ওপর পানির উচ্চতা বেড়েই চলেছে।
সিরাজগঞ্জের কাজিপুর পয়েন্টে বুধবার সকালে যমুনার পানি ৬১ সেন্টিমিটার ওপরে ও শহররক্ষা বাঁধ হার্ডপয়েন্ট এলাকায় ৫২ সেন্টিমিটার ওপরে রেকর্ড করা হয়েছে।
বাড়িঘরে পানি ঢুকে বিপাকে পড়েছে মানুষ। দুশ্চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে গবাদিপশু। একদিকে শুকনা জায়গার অভাব, আরেক দিকে খাদ্যের সংকট।
আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষের জায়গা থাকলেও গবাদিপশুর জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই। কেউ কেউ মাচা করে পশুগুলো রাখার চেষ্টা করছেন।
গরুর চারণভূমি বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় খাবারের জন্য নির্ভর করতে হচ্ছে বাজার থেকে কেনা খাদ্যের ওপর। তবে গোখাদ্যের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খাচ্ছেন খামারি ও চাষিরা।
শাহজাদপুর উপজেলার রাউতারা গ্রামের মামুন হোসেন বলেন, ‘উজানের ঢল ও অতি বর্ষণে কয়েক দিন ধরে শাহজাদপুরের করতোয়া, বড়াল, হুরাসাগরসহ সব নদনদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। আমাদের রাউতারা স্লুইসগেটের পাশের রিংবাঁধ ভেঙে গেছে।
‘এতে ফসলের মাঠ ও গোচারণভূমি বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। নেপিয়ার ঘাসের জমি ডুবে যাওয়ায় গোখাদ্যের সংকট তৈরি হয়েছে। গ্রামের কাঁচা রাস্তা বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় চলাচলে দুর্ভোগ বেড়েছে।’
শাহজাদপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই উপজেলায় ৭ হাজার গবাদিপশুর খামার রয়েছে। কোরবানি ঈদ সামনে রেখে ৭০ হাজার গবাদিপশু প্রস্তুত করা হয়েছে। আর মাত্র কয়েক দিন পরই পশু বিক্রি শুরু হবে। এ অবস্থায় কাঁচা ঘাসের অভাব খামারিদের মহাবিপদে ফেলেছে।’
পুরো জেলার অবস্থা সম্পর্কে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গৌরাঙ্গ কুমার বলেন, ‘পুরো সিরাজগঞ্জে ৯ লাখ গরু, সাড়ে ৩ লাখ ছাগল ও ২ লাখ ভেড়া আছে। ঈদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ৪ লাখ পশু।
‘বন্যায় গোচারণভূমি ডুবে যাওয়ায় ঘাসের অভাবের বিষয়টি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা আমাকে জানিয়েছেন। সরকারি কোনো সহযোগিতা পেলে দ্রুত তা কৃষক ও খামারিদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।’