ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীকে নিয়ে ক্লাবের সভাপতি ওবায়দুল ইসলামের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ।
ক্লাবের সদস্য ও ফার্মেসি অনুষদের ডিন অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছারকে আহ্বায়ক করে গঠিত এই কমিটি ওবায়দুল ইসলামের কাছে এই ঘটনার লিখিত ব্যাখ্যা চেয়েছে।
ওবায়দুল ইসলাম বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক।
গত সোমবার ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সভার পর গতকাল মঙ্গলবার এই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
কমিটি গঠন করার কারণ হিসেবে ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এবং নীল দলের সিনেট সদস্য অধ্যাপক আব্দুর রহীম বলেন, ‘ক্লাব একটি সামাজিক সংগঠন। এখানে অনেকেই আসতে পারে। তবে ক্লাবের সাধারণ সম্পাদককে অবহিত না করে এই ধরনের আনুষ্ঠানিক মিটিংয়ের কারণেই অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
নিজের অবস্থান তুলে ধরে ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ‘এটা কোনো আনুষ্ঠানিক সভা ছিল না। আমরা একসঙ্গে বসে শুধু আড্ডা আর খাওয়াদাওয়া করেছি। হয়রানি করার উদ্দেশ্যেই মূলত এ ধরনের ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
জানা যায়, রোববার রাতে রুহুল কবীর রিজভী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে যান। সঙ্গে তার স্ত্রীসহ আরও কয়েকজন ছিলেন। সেখানে তারা রাত ১টা পর্যন্ত অবস্থান করেন।
মূলত ক্লাবের ওবায়দুল ইসলামের আমন্ত্রণেই তারা এসেছেন বলে জানা যায়।
ওবায়দুল ইসলামের সঙ্গে রিজভীর অবস্থানের সময় ক্লাবের অন্য কক্ষে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের কয়েকজন সদস্যও উপস্থিত ছিলেন বলে জানা যায়।
তারাই মূলত ক্লাবের সাধারণ সম্পাদককে ফোন দিয়ে এই ঘটনার বিষয়ে অবহিত করান।
এই বিষয়ে ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ‘রাতে ক্লাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অতিথিরা আসেন। খাওয়াদাওয়া করেন। আমরা তো কখনো এ নিয়ে প্রশ্ন তুলিনি। কারণ এটা স্বাভাবিক ব্যাপার।’
ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ‘উনাদের সঙ্গে আমার কোনো বৈঠক হয়নি। সাধারণ আড্ডা হয়েছে।’
ওবায়দুল বলেন, সিসিটিভির অধীন থাকা শিক্ষক ক্লাবে কি কেউ গোপন বৈঠক করতে আসবে? সঙ্গে কিন্তু উনার স্ত্রীও ছিলেন। কেউ যদি গোপন বৈঠকের পরিকল্পনা নিয়ে আসে তাহলে কি স্ত্রীকে নিয়ে আসবেন?
সার্বিক বিষয়ে ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহীম বলেন, ‘ক্লাবের নিয়ম হলো, কোনো ফরমাল অনুষ্ঠান করতে হলে ক্লাবের সাধারণ সম্পাদককে এই বিষয়ে অবহিত করতে হয়। কেন তিনি ক্লাবের সাধারণ সম্পাদককে না জানিয়ে এই সভা করেছেন, সেটার বিষয়ে জানতে কমিটি তার থেকে লিখিত ব্যাখ্যা চেয়েছে।
তবে তিনি গত সোমবার অনুষ্ঠিত কার্যকরী পরিষদের সভায় মৌখিক ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
এটা কোনো আনুষ্ঠানিক সভা ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আনুষ্ঠানিক বৈঠক না হলেও ১০ থেকে ১৫ জন একসঙ্গে বসলে খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারে প্রস্তুতির বিষয় থাকে। তাই সাধারণ সম্পাদককে অবহিত করানোর বিষয়ে বলা হয়েছে।
সাধারণ সম্পাদক যেহেতু অবহিত ছিলেন না, তাই যারা প্রশ্ন উঠাতে চান তারা স্বাভাবিকভাবেই এই প্রশ্নটা উঠাচ্ছেন।
শুধু এই কারণে অনুসন্ধান কমিটি এবং ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হতে পারে কি না জানতে চাইলে আব্দুর রহীম বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের একটি ঐতিহ্য আছে। যেহেতু এটি নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, তাই ক্লাবের কার্যকরী পরিষদ মনে করেছে, এটি নিয়ে একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি হতে পারে, যাতে কোনো বিতর্কের অবকাশ না থাকে।’