বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সীতাকুণ্ডের আগুন: গাড়ির মালিকদের সাড়ে ৪ কোটি টাকা ক্ষতি

  •    
  • ১৯ জুন, ২০২২ ২১:০০

‘ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনা আমাদের ওপর যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে। এই ঘটনায় প্রায় ১৬টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে আটটি গাড়ি। অবশিষ্ট গাড়িগুলোর কেবিন ও কনটেইনার পুড়ে গেছে। আনুমানিক এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা।’

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে গাড়ির মালিকদের সাড়ে ৪ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে চারটি সংগঠন।

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে রোববার সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন আন্তজেলা মালামাল পরিবহন সংস্থা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতি এবং বাংলাদেশ ট্রাকচালক শ্রমিক ফেডারেশন, চট্টগ্রাম।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আন্তজেলা মালামাল পরিবহন সংস্থা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী জাফর আহম্মদ বলেন, ‘বিএম ডিপোতে এই অঞ্চলের স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণে এক ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি হয়। ঘটনার সময় ডিপোতে থাকা পণ্য পরিবহনযান বিশেষত কাভার্ড ভ্যান, প্রাইমমুভার-ট্রেইলার ও ট্রাকগুলো মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। এসব গাড়ির মালিকরা নিজ সম্পদ হারিয়ে এখন চরম হতাশা ও আর্থিক অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

‘ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনা আমাদের ওপর যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে। এই ঘটনায় প্রায় ১৬টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে আটটি গাড়ি। অবশিষ্ট গাড়িগুলোর কেবিন ও কনটেইনার পুড়ে গেছে। আনুমানিক এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িগুলোর উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের জন্য মালিক পক্ষকে অবহিত করেছি। দায়িত্বশীল সরকারি কর্তৃপক্ষকে গাড়ির তালিকা দিয়েছি। এই অবস্থায় আমাদের দাবি, অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত পণ্য পরিবহনের গাড়িগুলো ও নিহত পণ্য পরিবহন শ্রমিকদের পরিবারকে উপযুক্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণ, আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণসহ উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে মালিক-শ্রমিক যৌথ আন্দোলনে যাওয়া ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকবে না।

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে রোববার সংবাদ সম্মেলনে করেন আন্তজেলা মালামাল পরিবহন সংস্থা ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি এবং বাংলাদেশ ট্রাকচালক শ্রমিক ফেডারেশন, চট্টগ্রাম। ছবি: নিউজবাংলা

ডিপোর দুর্ঘটনায় আহত চালক-সহকারীরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জানিয়ে চৌধুরী জাফর আহম্মদ বলেন, ‘এই শ্রমিকদের বিষয়ে ডিপো কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। তা ছাড়া মারা যাওয়া শ্রমিকদের পরিবার কী অবস্থায় আছে, সে বিষয়েও কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় দায়িত্ব পালন করছে না।’

প্রায় সব মালিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে পণ্য পরিবহন সেবা অব্যাহত রাখতেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই দুর্ঘটনায় যেসব মালিকের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তারা এক প্রকার দেউলিয়া হয়ে গেছেন।

‘একদিকে তারা যেমন গাড়ির কিস্তি দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন, অন্যদিকে নিজেদের প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বেতন, অফিস পরিচালনা এবং পরিবার পরিচালনার ব্যয় বহন করতে পারছেন না।’

ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে চৌধুরী জাফর আহম্মদ বলেন, ‘নিয়মনীতির চরম উপেক্ষা এবং ডিপো মালিকপক্ষের ঘৃণ্য লোভের করুণ বলি হয়েছে অসংখ্য মানুষের জীবন। ধ্বংস হয়েছে শত শত কোটি টাকার সম্পদ। তাই মালিকপক্ষ, বন্দর কর্তৃপক্ষ সর্বোপরি সরকার এই দায় এড়াতে পারে না। ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।’

আগুনের পর বিস্ফোরণ

নেদারল্যান্ডস ও বাংলাদেশের যৌথ মালিকানাধীন (জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি) প্রতিষ্ঠান বিএম কনটেইনার ডিপো সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকায়। সেখানে গত ৪ জুন রাত ৯টার দিকে আগুন লাগে।

একে একে ছুটে যায় চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট। নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলা থেকেও পরে যোগ দেয় কয়েকটি ইউনিট। ৫ জুন সকাল পর্যন্ত আগুন নেভাতে আসা ইউনিটের সংখ্যা বেড়ে হয় ২৫টি। কিন্তু কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক পদার্থের কারণে দফায় দফায় বিস্ফোরণে বাড়ে আগুনের ভয়াবহতা।

৮৭ ঘণ্টা পর ৮ জুন দুপুরে বিএম কনটেইনার ডিপোর আগুন নেভে। সাংবাদিকদের বুধবার দুপুর ১২টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ১৮ ব্রিগেডের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম হিমেল।

আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৪৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

এ বিভাগের আরো খবর