শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি নৌপথে শরীয়তপুরের জাজিরায় সংঘর্ষের সময় বেগম সুফিয়া কামাল ফেরির মাস্টার ঘুমাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ যাত্রীদের।
এমন অভিযোগের বিষয় স্বীকার করেছেন মাস্টার হাসান ইমাম। তিনি জানান, দুর্ঘটনার সময় তার সহকারীরা ফেরি চালাচ্ছিলেন।
জাজিরার পাইনপাড়া চ্যানেলের মুখে শনিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে বেগম সুফিয়া কামাল ও বেগম রোকেয়া ফেরির মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় গাড়িচাপায় একজন নিহত ও ১০ জন আহত হন। নিখোঁজ রয়েছেন একজন।
সংঘর্ষে বেগম রোকেয়া ফেরির র্যামের হাইড্রোলিক গিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেই সঙ্গে ফেরিতে থাকা অন্তত আটটি যানবাহনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সংঘর্ষের ঘটনায় রোববার দুপুরে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিসি)।
বেগম রোকেয়া ফেরিতে থাকা আমির হোসেন নামের একজন বলেন, ‘সংঘর্ষের সময় বেগম সুফিয়া কামাল ফেরির চালক ঘুমাচ্ছিলেন। ফেরিটি দীর্ঘ সময় নদীতে ভাসছিল। দুর্ঘটনার সময় ফেরির সার্চলাইটসহ সব লাইট বন্ধ ছিল। চ্যানেলের বিপজ্জনক মোড় পার হওয়ার সময় কেউই সাইরেন বাজায়নি।’
প্রাইভেট কারের চালক ইমরান হোসেন বলেন, ‘আমি ফেরিতে উঠে গাড়িতে ঘুমিয়ে পড়ি। বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। আমার গাড়ি পাশের ফেরির রেলিং-এর সঙ্গে ধাক্কা খায়। গাড়ির সামনের ও পেছনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
‘দুর্ঘটনার সময় ফেরির সব লাইট বন্ধ ছিল। কোনো সাইরেনও বাজানো হয়নি।’
এ বিষয়ে হাসান ইমাম বলেন, ‘ফেরির দুর্ঘটনার সময় আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। সহকারীরা ফেরি চালাচ্ছিলেন। বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে দেখি বেগম রোকেয়ার সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে ফেরিটি নিয়ন্ত্রণে নেই।
‘এরপর ফেরি নিয়ে শিমুলিয়া ঘাটে যাই। আমাদের ফেরিতে থাকা একজন পিকআপ ভ্যানের চালক নিহত হয়েছেন।’
বিআইডব্লিউটিসির মেরিন বিভাগের সহ-মহাব্যবস্থাপক আহামেদ আলী বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় চার সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তিন কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে হবে। তদন্তে ফেরির লাইট জ্বলছিল কি না বা চালক ঘুমাচ্ছিলেন কি না সেসব খতিয়ে দেখা হবে। দুর্ঘটনার জন্য ফেরির চালক বা অন্য কেউ দায়ী হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’