ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নেতাই নদীর বাঁধ ভেঙে পাঁচটি ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে অন্তত ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ধোবাউড়া উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইশতিয়াক হোসাইন উজ্জ্বল রোববার সকালে নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নেতাই নদীর বাঁধ ভেঙে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এক সপ্তাহ আগে নিম্নাঞ্চলে কিছুটা পানি থাকলেও কারও সমস্যা হয়নি। তবে গত তিন দিনের ব্যবধানে উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে পাঁচটি ইউনিয়ন- দক্ষিণ মাইজপাড়া, গামারিতলা, ধোবাউড়া, পোড়াকান্দুলিয়া ও ঘোষগাঁও ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।’
‘ইতোমধ্যে ১০ টন চাল ও এক লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। আজকে থেকেই সরকারি এসব বরাদ্দ পানিবন্দি পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হবে।’
স্থানীয়রা জানান, পাহাড়ি ঢলে দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নে রহমতের বাজারের পাশের নেতাই নদীর বাঁধ, ঘোষগাঁও ইউনিয়নের রায়পুর এবং ভালুকাপাড়া এলাকায় ভাঙন অংশ দিয়ে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করেছে। ভাঙনের পর থেকেই হু হু করে পানি বেড়ে উপজেলার অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। গবাদি পশু নিয়ে পড়েছে বেকায়দায়। ঢলের পানিতে ভেসে গেছে অসংখ্য পুকুরের মাছ।
দবতিহালা গ্রামের সুরুজ মিয়া বলেন, ‘বন্যার পানিতে আমরা গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছি। ঘরে পানি ওঠার কারণে রান্না করা যাচ্ছে না৷ আমরা অনেক কষ্টে দিন-রাত পার করছি।’
একই গ্রামের জালাল উদ্দিন নামের আরেকজন বলেন, ‘বন্যার পানিতে আমাদের টিউবওয়েল ডুবে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। ঘরের ভেতর পানি থইথই করছে। পরিবার ও গবাদিপশু নিয়ে বিপদে আছি। আরেকটু পানি হলে গবাদিপশু কম দামে বিক্রি করে স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হবে।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ময়মনসিংহ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আখলাকুল জামিল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঘণ্টায় ঘণ্টায় পানির উচ্চতা বাড়ছে। গতকাল রাতে ধোবাউড়ায় নেতাই নদীর পানি বিপৎসীমার ৭২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। আজকে বৃষ্টি না থাকায় পানি কমতে পারে। কয়েক দিন ধরে ব্রহ্মপুত্র নদের পানিও বাড়ছে। দ্রুত পানি বাড়তে থাকলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ময়মনসিংহে বন্যার শঙ্কা রয়েছে।’
ধোবাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফৌজিয়া নাজনীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পানিবন্দি মানুষের জন্য এক হাজার ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ত্রাণের মধ্যে রয়েছে চিড়া ১ কেজি, মুড়ি হাফ কেজি, চিনি হাফ কেজি, খাবার স্যালাইন ৫টা, মোমবাতি ২টা ও লাইটার।’