উজানের পাহাড়ি ঢল আর টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ ও ইটনা উপজেলায় পানি বেড়ে যাওয়ায় ১৫টি গ্রামের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।
এ ছাড়া জেলার ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম ও নিকলী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে সড়ক, পানি উঠেছে বসতবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ দোকানপাটে। এরই মধ্যে অনেকেই শনিবার সকাল থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। গবাদিপশুসহ মালামাল সরিয়ে নিতে শুরু করেছেন কেউ কেউ।
জেলার কিশোরগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ নিউজবাংলাকে শনিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘বন্যার কারণে কিশোরগঞ্জের দুটি উপজেলার ১৫টি গ্রামের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এই ১৫টি গ্রামে ১০ হাজার গ্রাহক রয়েছে। পানি কমে গেলেই আবার বিদ্যুৎ লাইন চালু করা হবে।’
কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ ও ইটনা হাওরের পানি বেড়ে যাওয়ায় চৌগাংগা ও নিয়ামতপুর অফিসের অধীন শান্তিপুর, চারিতলা, বালিয়াপাড়া, খাকশ্রী, সুতারপাড়া, বালিখলা, পাঁচকাহনিয়া, বড়িবাড়ি, এনসইলা, দিয়ারকান্দি, বাদলা, কুর্শি, শিমুলবাঁক, টিয়ারকোনা, চং নোয়াগাঁও এলাকায় লাইনের ক্লিয়ারেন্স কমে যাওয়ার নিরাপত্তার স্বার্থে শনিবার রাত থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে
কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমান বলেন, ‘কিশোরগঞ্জের নদ-নদীর পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে সিলেট ও সুনামগঞ্জের মতো কিশোরগঞ্জের অবস্থাও ভয়াবহ হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। হাওর অঞ্চলে নৌকা চলাচল করায় বিদ্যুতের তারের সঙ্গে লেগে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনার জন্যই বিদ্যুৎ সরবরাহ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এভারেজে বিভিন্ন পয়েন্টের পানি তিন ফুট পর্যন্ত বেড়েছে। সরেজমিন দেখার জন্য আমি হাওরের পথে রওনা হয়েছি।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে হাওর অঞ্চল ঘুরে দেখেছি। অনেক এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। সেখানকার লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত দুই হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার, ১৪০ টন চাল ও নগদ আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।’