উজান থেকে নেমা আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীতে পানি বেড়ে যমুনা নদীর ওপরও প্রভাব ফেলেছে। যমুনার পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ক্রমাগত বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করেছে।
জেলার কাজিপুর পয়েন্টে যমুনার পানি বিপৎসীমার এক সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা পানি শহর রক্ষা বাঁধ এলাকায় আরও ৪৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার মাত্র ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে বন্যার আশঙ্কা করছেন নদী পাড়ের মানুষ।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপসহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন শনিবার সকাল ৯টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, জেলার কাজিপুর পয়েন্টে গত ১২ ঘণ্টায় ৮ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকালে ৬টায় জেলার কাজিপুর পয়েন্টে যমুনার পানির স্তর রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ দশমিক ২৬ মিটার। যেখানে পানির বিপৎসীমার স্তর ধরা হয় ১৫ দশমিক ২৫ মিটার।
সিরাজগঞ্জ শহরের হার্ড পয়েন্ট এলাকায় পানির স্তর রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৩২ মিটার যেখানে বিপৎসীমা ধরা হয় ১৩ দশমিক ৩৫ মিটার।
তিনি আরও বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ৪৩ সেন্টিমিটার বেড়ে শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে বিপৎসীমার মাত্র ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে যমুনায় আরও কয়েকদিন পানি বৃদ্ধি পাবে বলে মনে হচ্ছে।’
এতে সিরাজগঞ্জে বন্যা হতে পারেও বলে জানান তিনি।
এদিকে গত কয়েকদিন পানি বাড়ার কারণে যমুনার পাশাপাশি ফুলজোড়, করতোয়া, বড়াল, হুড়াসগর, ইছামতীসহ চলনবিলের পানি বাড়তে থাকায় নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে।
এরই মধ্যে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি প্লাবিত হওয়ায় কাঁচা পাট, তিল, কাউন, বাদাম, শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ধরনের উঠতি ফসল নষ্ট হচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন কৃষকেরা।
ভাঙন যে অঞ্চলে
যমুনার পানি বাড়ায় জেলার কাজিপুর, চৌহালী, এনায়েতপুর ও শাহজাদপুরের চরাঞ্চলে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। ভাঙন এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে নিম্নবর্তী এলাকায় বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে ভাঙনসহ যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত আছে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড।’