বান্ধবীর সঙ্গে বন্ধুরা মিলে সেলফি তোলায় যশোরে এক ছাত্রকে বেধড়ক পিটুনি ও বুকে লাথি মেরেছেন বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক। ওই শিক্ষার্থী এখন যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
শহরের মিউনিসিপ্যাল প্রিপারেটরি উচ্চ বিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার নবম শ্রেণির শুভ ইসলাম শহরের শংকরপুর এলাকার পলাশ হোসেনের ছেলে ও বিদ্যালয়টির মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী।
অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম আমিরুল ইসলাম। শুভকে মারধর ও বুকে লাথি মারার বিষয়টি স্বীকার করেছেন তিনি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শুভ নিউজবাংলাকে বলে, ‘স্কুলে এখন অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষা চলছে। বৃহস্পতিবার আমাদের শেষ পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা শেষ হওয়ায় ক্লাসরুমে কয়েকজন বন্ধুবান্ধবী মিলে ছবি তুলছিলাম। এটি দেখে আমিরুল ইসলাম স্যার এসে আমাকে বেত দিয়ে মারতে শুরু করেন। একপর্যায়ে আমাকে জোরে বুকে লাথি মারলে আমি দূরে ছিটকে পড়ে যাই।’
নির্দোষ দাবি করে এ শিক্ষার্থী আরও বলে, ‘আমাদের কোনো দোষ নাই। পরীক্ষা শেষে ক্লাসরুমে কোনো নাচানাচি বা চিৎকার করিনি। বিনা কারণে এসে শুধু আমাকে মারল।’
এ ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়ে শুভর মা শাহানা খাতুন বলেন, ‘বিদ্যালয়ে ছেলেমেয়েরা আসে শেখার জন্য। সেখানে তারা কোনো দোষ করলে শাসন করার অধিকার শিক্ষকদের আছে। তবে বেধড়ক মারপিট ও বুকে লাথি মারা কোনো শিক্ষকের কাজ না।
‘আমার ছেলেটারে বুকে লাথি মেরেছে; এতে যদি ওর বড় কোনো বিপদ হতো, এর দায় কে নিত? এমনভাবে ছেলেকে মেরেছে সারা শরীরে জখমের দাগ ও সাদা স্কুল ড্রেস রক্তে লাল হয়ে গেছে।’
অভিযুক্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এর আগেও শুভ বিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খলার সঙ্গে জড়িত ছিল। বারবার তাকে সতর্ক করা হলেও সে নিজেকে শুধরায়নি।’
মারধরের সত্যতা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার পরীক্ষা শেষ হলে ছেলেটি (শুভ) একটি শ্রেণিকক্ষে তার কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে তাদের সঙ্গে থাকা একটি মেয়ের সঙ্গে সেলফি তুলছিল। তাদের সেলফি ও ছবি তোলা দৃষ্টিকটু হওয়ায় রাগে ছেলেটিকে মারধর করেছি। তবে রাগের মাথায় লাথি মারা ঠিক হয়নি।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সবুর খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীর দোষ থাকলেও এভাবে মারা ঠিক হয়নি। সহকারী শিক্ষক রাগের মাথায় কাজটি করেছেন। ঘটনাটি ঘটার পরে আমি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ও স্বজনদের ডাকি। দুই পক্ষের বক্তব্য শুনেছি। ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তে অভিযুক্ত শিক্ষককে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’