বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রেমিট্যান্স প্রবাহ স্বাভাবিক ধারায় ফিরছে: সংসদে প্রধানমন্ত্রী

  •    
  • ১৫ জুন, ২০২২ ১৯:০৩

শেখ হাসিনা বলেন, ‘উচ্চ রেমিট্যান্স অর্জনকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বে অন্যতম। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে রেমিট্যান্সের ধারাবাহিকতায় ব্যাঘাত ঘটে। করোনার প্রকোপ কমতে শুরু করায় এখন রেমিট্যান্স আগের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে।’

দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ স্বাভাবিক ধারায় ফিরতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার সংসদ অধিবেশনে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীর তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘উচ্চ রেমিট্যান্স অর্জনকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বে অন্যতম। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে রেমিট্যান্সের ধারাবাহিকতায় ব্যাঘাত ঘটে। করোনার প্রকোপ কমতে শুরু করায় এখন রেমিট্যান্স আগের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে।’

অধিবেশনের শুরুতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর এবং অন্যান্য মন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত বলে ঘোষণা দেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০১৯-২০ অর্থবছরে রেমিট্যান্স হিসেবে ১৮ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার অর্জিত হয়। ২০২০-২১ অর্থবছরে এটি রেকর্ড পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার। এটা পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। সে সুবাদে প্রবাস আয় প্রাপ্তিতে বিশ্বে সপ্তম স্থান অধিকার করে বাংলাদেশ।

‘২০২১-২০২২ অর্থবছরে রেমিট্যান্স কিছুটা কমে জুলাই-এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে ১৭ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার অর্জিত হয়েছে, যা পূর্ববর্তী অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ দশমিক ২৫ শতাংশ কম।

‘বিগত ২০১৯-২০, ২০১৮-২০১৯ ও ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসের রেমিট্যান্সের গড় ছিল ১৩ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে দেখা যাচ্ছে, কোভিড-পূর্ববর্তী তিন বছরের প্রথম ১০ মাসে প্রাপ্ত রেমিট্যান্সের গড় অপেক্ষা ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে প্রাপ্ত প্রবাস আয়ের প্রবৃদ্ধি ২৮ দশমিক ৯১ শতাংশ বেশি। কাজেই চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্স কমছে না বলা যেতে পারে।’

রেমিট্যান্সের প্রবাহ কোভিড-পূর্ববর্তী স্বাভাবিক ধারায় ফিরতে শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেন সরকার প্রধান। তিনি উল্লেখ করেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে কোভিড মহামারির সময় প্রবাস আয়ে অস্বাভাবিক প্রবৃদ্ধি ঘটে।

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে বিগত ২০২০-২১ অর্থবছরের তুলনায় প্রবাস আয় কমার কারণ তুলে ধরেন সংসদ নেতা।

তিনি বলেন, ‘২০২০-২১ অর্থবছরের শুরুতে কোভিড মহামারিতে প্রবাসীরা এক ধরনের অনিশ্চয়তা থেকে তাদের জমানো টাকা দেশে পাঠিয়েছিলেন। অনেকে চাকরি হারিয়ে কিংবা ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে সব অর্থ দেশে নিয়ে আসেন।

‘এখন পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। অনেক প্রবাসী নতুন করে ব্যবসা শুরু করতে গিয়ে দেশে রেমিট্যান্স পাঠানো কমিয়ে দিয়েছেন। বাংলাদেশের অর্থনীতি কোভিড-১৯ মহামারি সফলভাবে মোকাবেলা করে স্বাভাবিক ধারায় ফিরলেও বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগকারী প্রধান প্রধান দেশের অর্থনীতি এখনও স্বাভাবিক ধারায় ফিরে আসেনি। ফলে ওইসব দেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীদের আয় তুলনামূলকভাবে কম থাকায় রেমিট্যান্স কম হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা-পরবর্তী সময়ে বিশ্বব্যাপী ভ্রমণ-যোগাযোগ ও ব্যবসা-বাণিজ্য সচল হয়েছে। ফলে ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরেও অর্থের লেনদেন বেড়ে যাওয়া রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার কারণ হতে পারে বলে প্রতীয়মাণ হচ্ছে।

‘জনশক্তি রপ্তানি ও বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়ানো সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ও কার্যক্রম চলমান।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ১৭০টি দেশে ১ কোটি ২০ লাখের বেশি কর্মী কর্মরত। সরকার বিদেশগামী কর্মীদের নিরাপদ অভিবাসন ও সম্মানজনক পেশা নিশ্চিতকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করছে।

‘সরকার নতুন নতুন শ্রমবাজারে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী প্রতি উপজেলা থেকে বছরে গড়ে এক হাজার কর্মী পাঠানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। অভিবাসনে পিছিয়ে পড়া দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ সব উপজেলা থেকে অধিক হারে অভিবাসনে উৎসাহী করার লক্ষ্যে পর্যায়ক্রমে দেশের সব উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী সংসদে জানান, গত এক যুগে বিদেশে মিশনগুলোতে শ্রম কল্যাণ শাখার সংখ্যা ১২টি থেকে ২৯টিতে বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই শাখাগুলো নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টি ও বিদ্যমান শ্রমবাজারের সম্প্রসারণ, বিদেশে নিয়োগকর্তার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ, অভিবাসী কর্মীদের কর্মপরিবেশ, সুবিধা ও সমস্যাবলী সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ, অভিবাসী কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও মামলা পরিচালনায় আইনি সহায়তা প্রদান, বিদেশে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত/কারাভোগরত কর্মীদের আইনানুগ সহায়তা প্রদান, বিদেশে আটককৃত বা বিপদগ্রস্ত কর্মীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সহায়তা প্রদানসহ অভিবাসী কর্মীদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।

এসব উদ্যোগের ফলে করোনা পরিস্থিতি বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও প্রবাসে নিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারি সত্ত্বেও ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৬৯ জন বাংলাদেশি কর্মীর বিদেশে কর্মসংস্থান হয়েছে।

২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত প্রথম ৪ মাসে ৪ লাখ ২৬ হাজার ৫৫৮ জনকে প্রবাসে নিয়োগ করা হয়েছে। এ বছরের অবশিষ্ট সময়ে প্রবাস-নিয়োগের এই ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকবে। ফলে আগামীতে রেমিট্যান্স উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে।

প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, বৈধ পন্থায় রেমিট্যান্স পাঠানোকে উৎসাহিত করতে সরকার ২০১৯ অর্থবছর থেকে প্রেরিত প্রবাস আয়ের ওপর ২ শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনা দিচ্ছে এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে ওই নগদ প্রণোদনা ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর