সাতসকালে ভোটকেন্দ্রে হাজির বয়সের ভারে ন্যুব্জ রহিমা বেগম। তাকে কেন্দ্রে নিয়ে এসেছেন তার ছেলের স্ত্রী দিলরুবা আক্তার। রহিমা বেগমের দৃষ্টিশক্তিহীন মেয়ে সালমা আক্তার মিনিও প্রতিকূলতা পেরিয়ে এসেছেন ভোট দিতে।
বালিথা শিশির আইডিয়াল স্কুলের মহিলা কেন্দ্রে প্রথমবারের মতো ইভিএমে দ্রুত ও নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পেরে খুশি তারা।
ঢাকার ধামরাই উপজেলার সুতিপাড়া ইউনিয়নে ইউপি নির্বাচনে ইভিএমে বুধবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এ ভোট চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
৭০ বছরের বৃদ্ধা রহিমা বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আগে ভোট দিতে অনেক টাইম লাগত। অনেকক্ষণ লাইনে খারায় থাকা লাগত। এবারই প্রথম ইভিএমে ভোট দিছি। শরীলডা ভালা না। হ্যারপরও সবার আগে সেন্টারে আইসা ভোট দিছি। ইভিএমে হ্যারা (পোলিং এজেন্ট) খালি আইডিকার্ড নিয়া সব ঠিক কইরা দিছে। হ্যারপর কালো পর্দার ভেতর গিয়া বোতামে টিপ দিছি। এক টিপেই ভোট দেয়া শ্যাষ।’
রহিমার মেয়ে সালমা আক্তার মিনিও প্রথমবারের মতো মায়ের সঙ্গে একই কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট দিয়েছেন। ভোট দিতে পেরে উচ্ছ্বাস জানান তিনিও।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমি তো চোখে দেখি না। মা আর ভাই-বউয়ের সঙ্গে এসেছি ভোট দিতে। ভোটে অনেক মানুষ আসে। অনেকক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ভোট দিতে হয় এসব জানি। তবে চোখের আলো না থাকায় এসব দেখার সৌভাগ্য না হলেও আগে ভোট দিতে দেরি হওয়ার ভোগান্তি বুঝি। কিন্তু এবার প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোট দিতে পেরে খুব ভালো লাগছে। অনেক কম সময়ে ঝামেলা ছাড়া ভোট দিতে পারছি।’
বালিথা শিশির আইডিয়াল স্কুল কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার ইসলাম আল হাজিব নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকাল থেকে শান্তিপূর্ণভাবে আমার কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভোটাররাও বেলা বাড়ার সঙ্গে ভোটকেন্দ্রে আসছেন। এই সেন্টারে ভোটার সংখ্যা ১৭০০-এর বেশি। আশা করছি দিনভর উৎসবমুখর পরিবেশে সুষ্ঠুভাবেই ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রথমবারের মতো হলেও এখন পর্যন্ত ইভিএম নিয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি।’
পঞ্চম ধাপে ধামরাই উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে একযোগে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। তবে সীমানা জটিলতার কারণে সুতিপাড়া একটি ইউনিয়নের ভোট স্থগিত করে আদালত। আজ সেই ইউনিয়নের ২৪ হাজার ৬৯৩ জন ভোটার ১৩টি কেন্দ্রে ভোট দিচ্ছেন।