কক্সবাজারের মহেশখালীতে নিখোঁজের ৩ দিন পরেও খোঁজ মেলেনি মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্মরত দুই শ্রমিকের। এ নিয়ে উৎকণ্ঠায় রয়েছে তাদের পরিবার। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অবশ্য বলছে, নিখোঁজ শ্রমিকদের উদ্ধারে চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা।
নিখোঁজ দুই শ্রমিক হলেন টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার হারেশা এলাকার মাইন উদ্দিন সরকারের ছেলে ৫৩ বছরের রমজান আলী ও মহেশখালীর মাতারবাড়ী ইউনিয়নের রাজঘাট এলাকার গিয়াস উদ্দিনের ২৩ বছর বয়সী ছেলে সাজ্জাদ হোসেন।
তারা দুজনই মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে দায়িত্বরত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পসকোর সাব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দ্য বেঙ্গল ইলেকট্রনিক লিমিটেড কোম্পানিতে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সুমিতমো করপোরেশনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ‘হাডসন’-এর ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ হামিদুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সাব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দ্য বেঙ্গল ইলেকট্রনিকস প্রকল্পে বালু ভরাটের কাজ করে আসছিল। গত ৮ জুন বিকেলে বালু আনলোডিংয়ের কাজ শেষ করে পাঁচজন শ্রমিক দুটি ড্রেজার নিয়ে পশ্চিমের চ্যানেল হয়ে কুহেলিয়া নদীতে যাচ্ছিলেন।
‘কিন্তু সন্ধ্যা ৭টার দিকে ধলঘাটার হাঁসের চর সংলগ্ন সাগরে ঢেউয়ের কবলে পড়ে ড্রেজার দুটি ডুবে যায়। এ সময় শ্রমিক সাখাওয়াত হোসেন, মোহাম্মদ মিজান ও সেফায়েত উল্লাহ সাঁতার কেটে একটি টাগবোটে উঠে যায়। কিন্তু সাজ্জাদ হোসেন ও রমজান আলী উঠতে পারেননি।’
বিদ্যুৎ প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান কোল পাওয়ার কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা কর্মকর্তা আলফাজ উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শনিবার দুপুর পর্যন্ত নিখোঁজ দুজনের খোঁজ মেলেনি। তাদের সন্ধানে যে স্থানে ড্রেজার দুটি ডুবেছে ওই অঞ্চল সার্ভে করা হচ্ছে। ড্রেজারের সন্ধান পেলে পরে ডুবুরি নামানো হবে। তবে ধারণা করছি, জোয়ারের তোড়ে ড্রেজারটি অন্য জায়গায় সরে গেছে।’
তাদের পাশাপাশি কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর সদস্যরা নিখোঁজদের সন্ধানে কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
নিখোঁজ শ্রমিক সাজ্জাদ হোসেনের বাবা গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলেটা চাকরির সাত দিনের মাথায় সাগরে ডুবে গেল। ঘটনার দিন থেকে আত্মীয়স্বজনেরা মিলে ট্রলার নিয়ে সোনাদিয়া চ্যানেল থেকে উজানটিয়া পর্যন্ত সন্ধান করছি। কিন্তু তিন দিনেও খোঁজ পাইনি।’
কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এমনকি তাদের খোঁজে কোনো ডুবুরি নামানো হয়নি বলেও অভিযোগ তার।
তিনি বলেন, ‘আমি আমার ছেলেকে ফেরত চাই।’
এ বিষয়ে মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল হাই বলেন, ‘নিখোঁজ শ্রমিকের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় জিডি করা হয়েছে। পুলিশ তাদের সন্ধানে বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর নিচ্ছে।’