বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গভীর রাতে সিসিইউতে ভর্তি খালেদা জিয়া

  •    
  • ১১ জুন, ২০২২ ০২:৪৯

গুলশানে খালেদার বাসভবন ফিরোজা থেকে তাকে নিয়ে শুক্রবার রাত ২টা ৫৫ মিনিটে এভারকেয়ারে রওনা হয় একটি গাড়ি। রাত ৩টা ১৪ মিনিটে হাসপাতালে পৌঁছায় গাড়িটি।

গভীর রাতে হঠাৎ অসুস্থ বোধ করায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে।

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে শুক্রবার রাত সোয়া ৩টার দিকে ভর্তি করা হয় তাকে।

বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন বিএনপি চেয়ারপারসন কার্যালয়ের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান।

এর আগে প্রেস উইংয়ের আরেক সদস্য শামসুদ্দিন দিদার বিএনপি চেয়ারপারসনকে হাসপাতালে নেয়ার খবর জানিয়েছিলেন।

গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে শুক্রবার রাত ২টা ৫৫ মিনিটে খালেদা জিয়াকে নিয়ে এভারকেয়ারে রওনা হয় একটি গাড়ি। রাত ৩টা ১৪ মিনিটে হাসপাতালে পৌঁছায় গাড়িটি।

ওই সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান।

তবে তার কী হয়েছে, সে বিষয়ে প্রাথমিকভাবে তারা কিছু জানাতে চাননি, তবে একটি সূত্র নিউজবাংলাকে জানায়, হঠাৎ শ্বাস নিতে সমস্যা দেখা দেয় খালেদার। এরপরই তাকে জরুরিভাবে হাসপাতালে নেয়া হয়।

এভারকেয়ার হাসপাতালে করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) কেবিনে অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে বিএনপি চেয়ারপারসনকে ভর্তি করা হয়েছে।

খালেদার এক চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণেই দ্রুত তাকে সিসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে।

ওই চিকিৎসক একে ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ বলছেন। তিনি জানিয়েছেন, শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি খালেদার কিছুটা জ্বর আছে।

কী জানালেন ফখরুল

এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে শনিবার ভোররাত পৌনে ৫টার দিকে বের হন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ওই সময় তার কাছে খালেদা জিয়ার অবস্থা জানতে চান সাংবাদিকরা।

জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি রাত দুইটার দিকে ডা. জাহিদের কাছে খবর পাই ম্যাডাম অসুস্থ বোধ করছেন; তখনই তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে নিতে হবে। আমি চলে আসি। আসার পরে আমাদের চেয়ারম্যান সাহেবের সঙ্গে কথা হয় এবং তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানের সঙ্গে কথা হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

‘ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন সেখানে। গতকালকে (বৃহস্পতিবার) বিকেল থেকেই দেখা যায়, তার (খালেদা) হার্টের কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। উনি তো একটু চাপা মানুষ; বলেননি কাউকে, তবে আজকে (শুক্রবার) সন্ধ্যায় যখন ডক্টর জাহিদ এবং সিদ্দিক সাহেব তাকে চেক করতে গিয়েছেন, তারা দেখেছেন যে, তার প্রবলেম হয়েছে। এখন নিয়ে এসেছেন।’

খালেদা জিয়া কী অবস্থায় আছেন, সে বিষয়ে ফখরুল বলেন, ‘এমনিতে তিনি স্ট্যাবল (স্থিতিশীল) আছেন, তবে পরীক্ষা করে এনজিওগ্রাম করে তখন বোঝা যাবে তার সমস্যাটা কতটা জটিল। এমনিতে তো তিনি গুরুতর অসুস্থ। তার সঙ্গে যদি আবার এখনই হার্টের প্রবলেম হয়, নিঃসন্দেহে সেটি জটিল আকার ধারণ করে আরকি। আল্লাহর কাছে দোয়া করি, তিনি আগের মতোই কাটিয়ে উঠবেন এবং সুস্থভাবে আমাদের মাঝে ফেরত আসবেন।’

দলের চেয়ারপারসন মাইল্ড স্ট্রোক করেছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মহাসচিব বলেন, ‘মাইল্ড স্ট্রোক কি না, সেটা বলতে পারব না। সমস্ত কিছু তো বোঝা যায় এনজিওগ্রাম করার পরে।

‘এগুলো ডাক্তার আপনাদের ভালো জানাতে পারবে, তবে ডাক্তারের সঙ্গে আলোচনা করে আমি যেটা জানতে পারলাম, সেটা আমি আপনাদের বললাম। তিনি সিসিইউতে আছেন। আমি আপনাদের মাধ্যমে জানাতে চাই, দেশবাসী যেন উনার জন্য দোয়া করেন।’

এনজিওগ্রাম শনিবার করা হবে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে ফখরুল বলেন, ‘ডাক্তাররা কালকে (শনিবার) সকাল সাড়ে ১০টায় একটি বোর্ডে বসবেন। পরে সব সিদ্ধান্ত নেবেন।

‘এই ধরনের কথা আমি বলতে পারব না। কারণ এইগুলো বোঝা যায় পরীক্ষা করার পরে। এখনও সব পরীক্ষা করা হয়নি। এখন সিসিইউতে আছেন।’

খালেদা জিয়া ইতোপূর্বে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সময়ই তার চিকিৎসায় এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎকদের একটি বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। সে বোর্ডই শনিবার তার চিকিৎসার বিষয়ে করণীয় জানাবে।

হাসপাতাল-বাসা-হাসপাতাল

দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে পাঠানো হয়। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার শর্তসাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। এখন পর্যন্ত পাঁচবার খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২০২১ সালের এপ্রিলে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন বিএনপি চেয়ারপারসন। ৫১ দিন পর বাড়ি ফিরে একই বছরের ১২ অক্টোবর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত আবার তিনি একই হাসপাতালে যান।

এরপর ১৩ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮১ দিন হাসপাতালে থেকে বাসায় ফিরেন বিএনপিপ্রধান।

সে সময় বিএনপির পক্ষ থেকে খালেদাকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে নানা কর্মসূচি পালন করা হয়। দাবি করা হয়, দেশের বাইরে না নিলে তাকে বাঁচানো যাবে না। কারণ তার যে রোগ, তার চিকিৎসা দেশে নেই।

খালেদা জিয়ার কী রোগ, সেটি জানানো হয়নি শুরুতে। পরে জানানো হয়, লিভার সিরোসিস হয়েছে তার। আর শরীরের অভ্যন্তরে রক্তক্ষরণ একবার কোনো রকমে সামাল দেয়া গেছে। এর চিকিৎসা শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের দুই-একটি স্থানে আছে।

চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি বাসার বাইরে যান খালেদা জিয়া করোনার টিকার বুস্টার ডোজ নিতে। মহাখালীর শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল প্রাঙ্গণে তিনি টিকা দিতে যান নিজের গাড়িতে করে। সেদিন দলের নেতা-কর্মীদের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। হাসপাতালের কর্মীরা গাড়িতে বসা অবস্থায় তাকে টিকা দেন।

এ বিভাগের আরো খবর