আজিমপুর এতিমখানার সম্পত্তির ওপর ১৮ তলা ভবন নির্মাণের জন্য কনকর্ডের করা রিভিউ খারিজ করেছে আপিল বিভাগ। সেই সঙ্গে কনকর্ডের নির্মাণ করা ওই ভবন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে এতিমখানার সম্পত্তি হিসেবে ৩০ দিনের মধ্যে বুঝিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
রিভিউ খারিজের আদেশ নিশ্চিত করে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘আজিমপুর এতিমখানার ২ বিঘা সম্পত্তি রিয়েল এস্টেট কোম্পানি কনকর্ডকে ভবন নির্মাণের জন্য তৎকালীন কমিটির সভাপতি ও সেক্রেটারি চুক্তি করে হস্তান্তর করলে ১৮তলা ভবন নির্মাণ করে কনকর্ড গ্রুপ। মিডিয়ায় ওই অবৈধ হস্তান্তরের সংবাদ প্রচারিত হলে জনস্বার্থে একটি রিট পিটিশন করে আজিমপুর এতিমখানার সম্পত্তি রক্ষায় নির্দেশনা চাওয়া হয়।’
ওই রিটের দীর্ঘ শুনানি শেষে বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের তৎকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০১৫ সালের ১৯ জুলাই রায় দেয়।
রায়ে কনকর্ডের তৈরি ১৮ তলা ভবন এতিমখানার পক্ষে বাজেয়াপ্ত করে ৩০ দিনের মধ্যে কনকর্ডকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবের মাধ্যমে এতিমখানাকে বুঝিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেন, ব্যর্থতায় জেলা প্রশাসককে ওই ভবন এতিমখানাকে ৭ দিনের মধ্যে দখল বুঝিয়ে দিতে নির্দেশ দেন।
বিবাদীদের কার্যকরী ম্যানেজমেন্ট কমিটি গঠন করে এতিমখানা পরিচালনার নির্দেশনাও দেয় আদালত এবং ঢাকা জেলা প্রশাসককে এতিমখানার সম্পত্তি হস্তান্তরের জালিয়াতি-প্রতারণা হয়ে থাকলে সে ব্যাপারে আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেন।
হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে কনকর্ড গ্রুপের এমডি মীর শওকত আলি আপিল বিভাগে আপিল করেন। আপিল বিভাগ তার আপিল খারিজ করে দেয়। এরপর তারা রিভিউ আবেদন করেন, সেটিও বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ আদালত খারিজ করে দিল। ফলে হাইকোর্টের নির্দেশনা বহাল থাকল।
অবৈধভাবে এতিমখানার সম্পত্তি হস্তান্তর অকার্যকর হয়েছে এবং নির্মাণ করা ১৮ তলা ভবন এতিমখানার সম্পত্তি হিসেবে বিবেচিত হবে বলে জানান আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
আদালতে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী এ ওয়াই মসিউজ্জামান এবং সিনিয়র ব্যারিস্টার আখতার ইমাম।
অন্যদিকে রিভিউ আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ ও এম এ হান্নান।