বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নারী অপহরণের চক্রে শঙ্কিত খোদ ওসি, ফেসবুকে সতর্কবার্তা

  •    
  • ৯ জুন, ২০২২ ০১:০৭

জৈন্তাপুর থানার ওসি গোলাম দস্তগীর গাজী বুধবার বলেন, ‘জৈন্তাপুরে একটি অপহরণকারী চক্র সক্রিয় রয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে আমরা এমন তথ্য পেয়েছি। অপহরণের একাধিক অভিযোগও পেয়েছি। সবগুলো ক্ষেত্রেই স্কুল ছাত্রীদের অপহরণ করা হয়েছে।’

সিলেটের জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে স্ট্যাটাস দিয়ে অপহরণ চক্রের বিষয়ে স্থানীয়দের সতর্ক করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, চক্রটির লক্ষ্য এলাকার স্কুল-কলেজের ছাত্রীরা। চক্রের সদস্যদের ধরতে উপজেলায় পুলিশের তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। সেইসঙ্গে সবাইকে সতর্ক করতে তিনি ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন।

ওসির ওই পোস্ট দেখে আতঙ্কিত স্থানীয়রা। কিশোরীদের স্কুল-কলেজে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন তারা।

‘ওসি জৈন্তাপুর সিলেট’ নামের ফেসবুক আইডি থেকে মঙ্গলবার ওই পোস্ট দেয়া হয়েছে।

তাতে লেখা হয়েছে, ‘একটি অপহরনকারী চক্র জৈন্তাপুর থানা এলাকায় অবস্থান করতেছে। পুরুষ ও মহিলা নিয়ে চক্রটি গঠিত। তাদের টার্গেট স্কুল / কলেজের মেয়েদের অপহরণ করে পাচার করে দেওয়া। এমতাবস্থায় স্কুল /কলেজের সম্মানিত শিক্ষকগনকে এই ব্যাপারে ছাত্রছাত্রীদের সতর্কত করার অনুরোধ জানাচ্ছি। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী স্কুল /কলেজেগুলো ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। আমাদের পুলিশিং তৎপরতা অব্যাহত আছে। এই ব্যাপারে জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য জৈন্তাপুরবাসীকে অনুরোধ জানাচ্ছি।’ (মূল পোস্টে বানান অপরিবর্তীত)।

এ বিষয়ে জৈন্তাপুর থানার ওসি গোলাম দস্তগীর গাজী বুধবার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জৈন্তাপুরে একটি অপহরণকারী চক্র সক্রিয় রয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে আমরা এমন তথ্য পেয়েছি। অপহরণের একাধিক অভিযোগও পেয়েছি। সবগুলো ক্ষেত্রেই স্কুল ছাত্রীদের অপহরণ করা হয়েছে।

‘সবাইকে সর্তক থাকার জন্য ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছি। তবে কোনো আতঙ্ক ছড়ানো আমার উদ্দেশ্য নয়। কেউ যেন আতঙ্কিত না হন। পুলিশও অপহরণকারীদের ধরতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। উপজেলা জুড়ে সর্তকতামুলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’

উপজেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মন্দির ও হাটবাজারে লোকজনকে সর্তক করতে প্রচার চালানো হচ্ছে বলেও জানান ওসি।

এ পর্যন্ত অপহরণের কতগুলো ঘটনা ঘটেছে জানতে চাইলে ওসি জানান, গত মাসে দুই ছাত্রীকে অপহরণ করা হয়েছে। আর গত মঙ্গলবার পর্যন্ত অপহরণের চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ এসেছে একটি।

জৈন্তাপুর থানা সুত্রে জানা গেছে গত ২০ মে চিকনাগুল উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয়। পরদিন তার পরিবার থানায় অভিযোগ করে। এরপর ২৯ মে সেন্ট্রাল জৈন্তা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির আরেক ছাত্রী স্কুলে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়। তাদের এখনও পাওয়া যায়নি।

এর আগে গত ৭ মে সিলেট ক্যান্টমেন্ট বোর্ড স্কুলের এক ছাত্রী জৈন্তাপুর থেকে নিখোঁজ হয়। এরপর অপহরণের অভিযোগে থানায় সাধারন ডায়েরি করে ওই ছাত্রীর পরিবার। ২৪ মে তাকে টাঙ্গাইল থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। অপহরণের অভিযোগে আটক করা হয় এক তরুণকে।

ওসি জানান, ওই ঘটনাটি অবশ্য অপহরণ নয় বলে পরে জানা গেছে। মেয়েটি স্বেচ্ছায় ওই তরুণের সঙ্গে চলে যায়।

তিনি আরও জানান, সবশেষ গত মঙ্গলবার সেন্ট্রাল জৈন্তা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রীকে দুই নারী অপহরণের চেষ্টা চালায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ওই ছাত্রীর বাবা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মঙ্গলবার অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা দিয়ে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিল আমার মেয়ে। ছৈয়া এলাকার রাস্তায় দুজন অপরিচিত নারী তাকে একটি কাগজ পড়ে দেয়ার জন্য বলে। কাগজটি মেয়ে হাতে নেয়ার জন্য এগিয়ে গেলে তারা ওই কাগজ তার মুখে গুঁজে একটি ইজিবাইকে তুলে নেয়। পরে তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে আমার মেয়ে লাফ দিয়ে নেমে পালিয়ে আসে।’

ওসি গোলাম দস্তগীর জানান, এ খবর জানার পরই মূলত অপরণকারীদের ধরতে তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। ওই ছাত্রীর পরিবার কোনো লিখিত অভিযোগ না দিলেও থানা পুলিশ তদন্ত করছে।

ওসির সতর্কবার্তার পোস্ট দেখে এলাকার লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

জৈন্তাপুরের হরিপুর এলাকার নেছার আহমদ বলেন, ‘আমার একটি মেয়ে স্কুলে পড়ে। এলাকায় শুনেছি অপহণকারীদের তৎপরতা বেড়ে গেছে। পুলিশ ফেসবুকে এমনটি জানিয়েছে।

‘ফেসবুকে ওই স্ট্যাটাস দেখার পর থেকে মেয়েকে নিয়ে ভয়ে আছি। তাকে স্কুলে একা ছাড়তে ভয় করছে।’

এ বিভাগের আরো খবর